একান্ত সাক্ষাৎকারে শাহে আলম মুরাদ

ঢাকা দক্ষিণ আ. লীগে গ্রুপিংয়ের রাজনীতি দূর করব

ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগে গ্রুপিংয়ের রাজনীতি দূর করার অঙ্গীকার করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। তিনি বলেন,ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ গ্রুপিংয়ের জায়গা। এখানে দলীয় নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে গ্রুপিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আমি যতোদিন নেতৃত্বে আছি, গ্রুপিং নিয়ে কাউকে ব্যস্ত থাকতে দেব না। সবাইকে দলের জন্যে, নেত্রীর জন্যে রাজনীতি করতে হবে। আমি সেই অনৈক্য ও গ্রুপিংয়ের রাজনীতি দূর করব। এটা আমার চ্যালেঞ্জ ও অঙ্গীকার। এমনটাই বললেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের (দক্ষিণ)নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়তে পারেন: মোসাদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক খতিয়ে দেখা হোক: তরিকত ফেডারেশন
অবিভক্ত ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শাহে আলম মুরাদ। পরে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন। এরপরে যুবলীগের রাজনীতি,আরও পরে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এবার হলেন বিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক। নতুন এ দায়িত্বকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। তিনি বলেন,আমার প্রথম চ্যালেঞ্জ ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের পরিচ্ছন্ন পূর্ণাঙ্গ কমিটি উপহার দেওয়া। তারপর ‘প্রায়োরিটি বেসিসে’ অন্য কাজগুলো সম্পন্ন করা। দলের অভ্যন্তরে কোন্দল সামাল দিয়ে,এখানে থাকা নানা মত-পথের মানুষকে এক করে এক ছাতার তলে নিয়ে আসা।
বর্তমান রাজনীতি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভেতরকার অবস্থা,আন্দোলন সংগ্রাম মোকাবেলা করার কৌশল,দক্ষিণের সব নেতাকর্মীকে এক ও ঐক্যবদ্ধ রাখা ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন শাহে আলম মুরাদ। কথা হয় তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ (দক্ষিণ) দায়িত্ব পাওয়ার পর নেত্রী (শেখ হাসিনা) বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়ন করব। 

বাংলা ট্রিবিউন: নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দলের কথা বললেন- এটা দূর করবেন কীভাবে?

আরও পড়তে পারেন: বাড়ছে অলস টাকা, ঋণ নিচ্ছেন না উদ্যোক্তারা

শাহে আলম মুরাদ:শেখ হাসিনার নির্দেশের বাইরে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কারও রাজনীতি করার সুযোগ নেই। আমরা শেখ হাসিনার কর্মী, এখানে অন্য কারও পরিচয় বা স্বার্থ পাত্তা পাবে না। নেত্রী যে নির্দেশনা দেবেন,আগামী নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেবেন,তাদের জেতাতে আমরা কাজ করব। মহানগরের রাজনীতিতে কোন্দল একটি পুরনো ব্যাপার। এই কোন্দল নিরসনে সবাইকে নিয়ে বসব, কথা বলব, তাদের অভিযোগ শুনব, সমাধানও দেব। 

বাংলা ট্রিবিউন: মহানগর দক্ষিণের কমিটি কেমন হবে,কিভাবে সাজাবেন?

শাহে আলম মুরাদ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। যেমন: ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা। পরীক্ষিত, ত্যাগী, পরিচ্ছন্ন, কর্মীবান্ধব, সাহসী নেতাদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশই আমাদের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা।

বাংলা ট্রিবিউন: কতোসংখ্যক তরুণ নেতৃত্ব আসবে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে?

শাহে আলম মুরাদ: তরুণদের নতুন কমিটিতে স্থান দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নির্দেশ দিয়েছেন।সেই অনুযায়ী কমিটির কাজ এগিয়ে চলছে। বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতেও সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও সহযোগী সংগঠনের সাবেক নেতারা স্থান পাবেন।

বাংলা ট্রিবিউন:পূর্ণাঙ্গ কমিটি কখন হবে?

শাহে আলম মুরাদ: খুব দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হবে। এই নিয়ে কাজ চলছে।

বাংলা ট্রিবিউন: আন্দোলন-সংগ্রামে মহানগর দক্ষিণ কতখানি ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন?

শাহে আলম মুরাদ: অতীতের সব আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছিল। আমার নেতৃত্বাধীন কমিটিও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। নবনির্বাচিত কমিটির ওপর সেই বিশ্বাস-আস্থা রয়েছে। তারা অতীতের চেয়ে আরও বেশি সাহসী ভূমিকা রাখবেন।

বাংলা ট্রিবিউন: ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধ লেগেই থাকত, দু’জনের দু’টি গ্রুপ সব সময় থাকত। আপনার ও আপনার সভাপতির মধ্যে কি সে রকম দলাদলি থাকবে?

শাহে আলম মুরাদ: আমি আগেই বলেছি-দলাদলির রাজনীতি দূর করাই আমার বড় চ্যালেঞ্জ। আমি ও আমার সভাপতির মধ্যে কখনও কোনও বিরোধ হবে না। কারণ আমি ও আমার সভাপতি দু’জনই শেখ হাসিনার রাজনীতি করি এবং উনার (শেখ হাসিনা) খুব আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনকারী।  

আরও পড়তে পারেন: বজ্রাঘাতে নিহতের লাশ পাহারায় কাটছে স্বজনদের রাত
বাংলা ট্রিবিউন:
আপনার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধানও চালাচ্ছে।

শাহে আলম মুরাদ: আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে কারা ষড়যন্ত্র করেছিল সেটা সবাই জানেন। তারা দলের ভাবমূর্তিও নষ্ট করেছে। তাদের বিচার আল্লাহ করবেন। দুর্নীতির যে অভিযোগ প্রতিপক্ষ এনেছে,তা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি, পারবেও না। যাদের অপকর্ম রয়েছে,তারাই আমার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালিয়ে ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চেয়েছে। কিন্তু তাদের কোনও লাভ হয়নি।

/এমএসএম/