X
বুধবার, ২২ মে ২০২৪
৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

এক নজরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

মাহফুজ সাদি, পাবনা থেকে
০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:৫২আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৪৮

১৯৬১ সালে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর রূপপুরে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সেই সময়কার পাকিস্তান সরকার। ১৯৬৮ সাল নাগাদ জমি অধিগ্রহণসহ বেশ কিছু কাজ আংশিক সম্পন্নও হয়। কিন্তু তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্তাল ঢেউ শুরু হলে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত বাতিল করে তৎকালীন সরকার। স্বাধীনতার পরে ফের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার। এরপর নানা সীমাবদ্ধতায় এর কাজ আর বেশি এগোয়নি।

১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতায় এলে গতি পায় প্রকল্পের কাজ। ২০০৯ সালে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করলে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের টানা তিন মেয়াদের শেষ দিকে এসে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। এই দীর্ঘ ৬২ বছরের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, ইতিহাসের বাঁক বদলের সাক্ষী হয়ে সফল হচ্ছে প্রকল্পটি, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।

স্বাধীনতার আগে

১৯৬১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের সময় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৮ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদী তীরবর্তী রূপপুর এলাকাকে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয়। একাধিক সমীক্ষার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের যথার্থতা যাচাই করা হয় ওই সময়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর এবং আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ভূমি উন্নয়ন, অফিস, রেস্ট হাউজ, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন ও কিছু আবাসিক ইউনিটের নির্মাণকাজ আংশিক সম্পন্ন করা হয়।

তবে ১৯৬৯-১৯৭০ সালে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাতিল করে দেয়।

স্বাধীনতার পরে

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ফের উদ্যোগ নেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তাঁর সরকার।

১৯৭৭-১৯৮৬ সালে মেসার্স সোফরাটম পরিচালিত ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন যৌক্তিক বলে বিবেচিত হয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (১২৫ মেগাওয়াট) নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। কিন্তু বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

১৯৮৭-১৯৮৮ সালে জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডের দুটি কোম্পানি দ্বিতীয়বার ফিজিবিলিটি স্টাডি করে। ওই স্টাডির মাধ্যমে প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি যৌক্তিকতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। এ স্টাডিতে ৩০০-৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।

১৯৯৭-২০০০ সালে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার উদ্যোগে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এ সময়ে মানবসম্পদ উন্নয়নসহ কিছু প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। সরকার বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্ল্যান-২০০০ অনুমোদন করে।

১৫ বছরে চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রকল্প

আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার অঙ্গীকার করা হয়েছিল। দলটি ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবে রূপ দিয়েছে।

২০০৯ সালে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে অপরিহার্য কার্যাবলি সম্পাদন’ শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রাথমিক সব কাজ এবং পারমাণবিক অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রম শুরু করা হয়। ২০০৯ সালের ১৩ মে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রাশান ফেডারেশনের স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি করপোরেশনের (রোসাটোম) মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’ বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

২০১০ সালের ২১ মে বাংলাদেশ এবং রাশিয়া সরকারের মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’ বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একটি জাতীয় কমিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে কারিগরি কমিটি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ ও আটটি সাব-গ্রুপ গঠন করা হয়।

২০১০ সালের ১০ নভেম্বর জাতীয় সংসদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানো বাংলাদেশ সফর করেন এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে আইএইএ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।

২০১১ সালের ৯ থেকে ১৫ নভেম্বর সময়ে বাংলাদেশের পারমাণবিক অবকাঠামোর সার্বিক অবস্থা মূল্যায়নের জন্য আইএইএ ইন্টেগ্রেটেড নিউক্লিয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিভিউ (আইএনআইআর) মিশন পরিচালিত হয়। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশ এবং রাশিয়া সরকারের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত আন্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

২০১২ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অ্যাক্ট-২০১২ পাস করা হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরকালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য স্টেট এক্সপোর্ট ক্রেডিট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। স্বাক্ষরিত আন্তরাষ্ট্রীয় চুক্তি (আইজিএ) এবং স্টেট এক্সপোর্ট ক্রেডিট এগ্রিমেন্টের ভিত্তিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

২০১৩ সালের ২ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পর্যায় কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অপারেটিং অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির বিধান সংবলিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইন, ২০১৫ জারি করা হয়। ১৮ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার জন্য নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (এনপিসিবিএল) গঠন করা হয়। ২৫ ডিসেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মূল পর্যায়ের কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

২০১৬ সালের ১০ থেকে ১৪ মে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পারমাণবিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আইএইএ’র সুপারিশ বাস্তবায়ন অগ্রগতি রিভিউ করার জন্য ফলোআপ মিশন পরিচালনা করা হয়।

২০১৬ সালের ২১ জুন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাইট লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। ২৬ জুলাই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল পর্যায়ের কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে স্টেট ক্রেডিট চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয়ে রাশান ফেডারেশন ও বাংলাদেশ পক্ষের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট কোঅর্ডিনেটিং কমিটি (জেসিসি)-এর একটি সভা ২০১৬ সালের ২২ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট জ্বালানি সরবরাহ, জ্বালানির ব্যবস্থাপনা, অপারেশন ও মেনটেইন্যান্স সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

২০১৭ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিতে পারস্পরিক সহায়তা’ সংক্রান্ত একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

২০১৭ সালের এপ্রিলে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার এবং গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিপ (জিসিএনইপি), ভারতের পরমাণু শক্তি সংস্থা, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানো ২০১৭ সালের ৩ জুলাই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি এই কেন্দ্র স্থাপনে সব আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও রাশান ফেডারেশনের সঙ্গে ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট এক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের অনুকূলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ডিজাইন ও কন্সট্রাকশন লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাই প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পথে পা দিয়েছে এবং দেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ ক্লাবে পদার্পণ করেছে।

২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এবং ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বা রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উভয় অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনার ঈশ্বরদীতে যুক্ত হন তিনি। রূপপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে রুশ আণবিক শক্তি সংস্থা-রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ উপস্থিত ছিলেন।

২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান আসে। ৫ অক্টোবর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের কাছে এই ইউরেনিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি।

প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর ও প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ানসহ বিদেশি নাগরিকরা গ্রিনসিটি আবাসনে থাকেন। গ্রিনসিটির ভেতরে তাদের জন্য নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই আয়োজন চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত।

গ্রিনসিটির বিভিন্ন দেয়ালে শিল্পী টিপু সুলতানের চিত্রকর্ম পরিদর্শনকালে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৩৩তম পারমাণবিক দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। সেইসঙ্গে এই ধরনের টেকনোলজি নিয়ে কাজের সক্ষমতা অর্জন করেছি আমরা।

১ হাজার ৬২ একর জমির ওপর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে এটি চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

২০২৪ সালের মার্চে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। আর দ্বিতীয় ইউনিটেও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সমপরিমাণ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পটির উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে। এর ফলে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন- আরেকটি ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ

/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
দুইদিন বিঘ্নিত হতে পারে ডেসকোর প্রিপেইড মিটার রিচার্জ
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে মিত্রদের সরাসরি জড়িত হওয়ার আহ্বান জেলেনস্কির
‘পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন প্রস্তুতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে’
সর্বশেষ খবর
আ.লীগ নেতার ঘোড়ার দৌড়ে লক্ষাধিক ভোটে পিছিয়ে দুই নেতা
আ.লীগ নেতার ঘোড়ার দৌড়ে লক্ষাধিক ভোটে পিছিয়ে দুই নেতা
বেসবলের দেশ হারিয়ে দিলো বাংলাদেশকে
বেসবলের দেশ হারিয়ে দিলো বাংলাদেশকে
দুইদিন বিঘ্নিত হতে পারে ডেসকোর প্রিপেইড মিটার রিচার্জ
দুইদিন বিঘ্নিত হতে পারে ডেসকোর প্রিপেইড মিটার রিচার্জ
শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সামনে অজ্ঞাত হামলায় ছাত্রদলের দুই নেতা আহত
শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সামনে অজ্ঞাত হামলায় ছাত্রদলের দুই নেতা আহত
সর্বাধিক পঠিত
১০০ লিচু ১০০০ টাকা, তবু দুশ্চিন্তায় এই গ্রামের চাষিরা
১০০ লিচু ১০০০ টাকা, তবু দুশ্চিন্তায় এই গ্রামের চাষিরা
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডার সংস্কারে নতুন আদেশ
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডার সংস্কারে নতুন আদেশ
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
সহিংসতার দুটি মামলা থেকে খালাস পেলেন ইমরান খান
সহিংসতার দুটি মামলা থেকে খালাস পেলেন ইমরান খান
প্রচুর ভুয়া ‘নুলস্তা’ পাওয়ায় ভিসা দিতে দেরি হচ্ছে: ইতালির রাষ্ট্রদূত
প্রচুর ভুয়া ‘নুলস্তা’ পাওয়ায় ভিসা দিতে দেরি হচ্ছে: ইতালির রাষ্ট্রদূত