দীর্ঘদিনের লুটপাট ও অনিয়মে ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘ছয়টি ব্যাংকের সমন্বয়ে একটি বড় ব্যাংক হবে।’
গভর্নর বলেন, ‘ছয়টি ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরকারই প্রাথমিকভাবে এসব ব্যাংকের মালিকানা গ্রহণ করবে। এরপর পর্যাপ্ত মূলধন জোগান দিয়ে ব্যাংকগুলোর ভিত্তি শক্ত করা হবে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে বিদেশি কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা হবে।’
একীভূত হওয়া দুর্বল ব্যাংকগুলো হলো—সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, এক্সিম ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এসব ব্যাংকের বেশির ভাগই দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি এবং সুশাসনের অভাবে জর্জরিত। কখনও কখনও বড় অঙ্কের ঋণ বিতরণে অনিয়ম, পরিচালনা পর্ষদের অদক্ষতা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা উপেক্ষা করায় ব্যাংকগুলো একপর্যায়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার যদি সময়মতো পুনর্গঠনের পদক্ষেপ না নিতো, তাহলে পুরো ব্যাংকিং খাতেই আস্থার সংকট তৈরি হতে পারতো। তবে সরকারি হস্তক্ষেপে ব্যাংকগুলো সময়ের সঙ্গে পুনরুদ্ধার করবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে ব্যাংকগুলোর আর্থিক বিবরণী পর্যালোচনা শেষ করেছে। নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পরবর্তী ধাপে এগোনোর জন্য একটি রোডম্যাপও তৈরি করা হচ্ছে।
এ উদ্যোগ ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনঃস্থাপনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।