X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তারবিহীন যুগে সিলেট, সমীক্ষায় আটকে আছে ঢাকা

সঞ্চিতা সীতু
২৫ জানুয়ারি ২০২০, ২০:২৭আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:০৯

সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকায় মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের তার নেওয়া সড়ক সিলেটের দরগাহ রোডের সব ধরনের তার ভূগর্ভে নেওয়ার মাধ্যমে শহরটি তারবিহীন যুগে প্রবেশ করেছে। তবে, রাজধানী ঢাকা এখনও সমীক্ষায় আটকে আছে। ঢাকাকে এখনও আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবেলিং বা তারবিহীন শহরে রূপান্তর করা সম্ভব হয়নি। 

বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, তারা এখন সমীক্ষা করছে। আর সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন রাজধানীকে তারবিহীন করার প্রথম উপায় হলো বিদ্যুতের সব তার মাটির নিচে পাঠিয়ে দেওয়া। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি না থাকলে ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা তারও মাটির নিচে নিয়ে যেতে বাধ্য হবেন।

ইতোমধ্যে সিলেটের দরগাহ গেইট এলাকার প্রায় ৩০০ মিটার সড়কের পাশে মাটির নিচে সফলভাবে বসানো হয়েছে বিদ্যুতের লাইন। ধীরে ধীরে পুরো শহরের তার মাটির নিচে নিতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে শহরটি। সিলেট সিটি করপোরেশনের সহায়তায় শহরটিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে  বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।

এদিকে, কয়েকবছর ধরেই ঢাকাকে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল নেটওয়ার্কে আওতায় নিয়ে আসার আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই উদ্যোগ আলোচনা পর্যন্তই রয়ে গেছে। ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) কেবল গুলশান বারিধারার একটি অংশ তারবিহীন করতে পাইলট প্রকল্পের প্রস্তাব বিদ্যুৎ বিভাগে জমা দিয়েছে। অন্যদিকে, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) শুধু ধানমন্ডিতে পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার এখন সম্ভাব্যতা জরিপ শেষ হয়েছে। আর কাজ শেষ হতে কমপক্ষে তিন বছর সময় লাগবে বলে। কারণ হিসেবে দুই বিতরণ কোম্পানিই বলছে, সিলেটের মতো ছোট জায়গা নয় তাদের। জায়গা বড় হওয়ার পাশাপাশি ঢাকার যেকোনও রাস্তা কাটতে গেলে রাজউক, সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, তিতাস আর বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির মধ্যে সমন্বয় করতে হয়, যা করা খুবই কঠিন। পাশাপাশি তারা বলছে, এই ধরনের প্রকল্প অনেক ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ ।

ঢাকাকে তারবিহীন করার বিষয়ে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিদ সারওয়ার বলেন, ‘আমাদের আওতাধীন বারিধারা ও গুলশান এলাকায় পাইলট প্রকল্প করতে চাই শুরুতে। এজন্য একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পূর্বাচল ও উত্তরা তৃতীয় ফেজে রাজউকের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। এই ধরনের প্রকল্প নিতে হলে যত ধরনের স্টেক হোল্ডার আছে, সবার সঙ্গে কথা বলতে হয়। সিটি করপোরেশন, রাজউক, রোডস অ্যান্ড হাইওয়েসহ যত পক্ষ আছে, সবার সঙ্গে কথা বলতে হবে।’

ঝুঁকিপূর্ণ তারের নিচে ঢাকা

ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এমনিতেই কিছু বিদ্যুতের লাইন মাটির নিচে নিতে গিয়েই সমস্যায় পড়ছি। সিটি করপোরেশনের অনুমতি পাচ্ছি না। প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর পিছিয়ে গেছে। এরপরও অনুমোদন পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘এককভাবে বিদ্যুতের তার মাটির নিচে নেওয়া সম্ভব নয়। সবার সমন্বয় প্রয়োজন হবেই। পাশাপাশি একটি সংস্থাকে নিতে হবে প্রধান দায়িত্ব। তার নেতৃত্বে অন্যরা যদি কাজ করে, তাহলেই তারগুলো মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সমন্বয় করা।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করাটা কঠিন হলেও আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। প্রথম পর্যায়ে ধানমন্ডির বেশ কিছু এলাকার বিদ্যুতের লাইন মাটির নিচে যাবে সবার আগে। আশা করি, আগামী তিন বছরের মধ্যেই ধানমন্ডির একটি অংশকে আমরা তারবিহীন করতে পারবো। এজন্য শিগগিরই ওই এলাকার গ্রাহকদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘পুরো ঢাকা শহরের ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকার তার মাটির নিচে নিতে হলে যে বিশাল কর্মযজ্ঞ দরকার, সে লক্ষ্যে সমীক্ষা করছি।’

ডিপিডিসি সূত্র জানায়, ঢাকার সব তার মাটির নিচে দিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠান এনার্জিট্রোন অস্ট্রেলিয়া নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা সম্ভাব্যতা জরিপ করা শুরু করেছে। মার্চ মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। এই জরিপের ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সময়ে নকশা করা হবে।

এদিকে, ধানমন্ডির ডিজাইনের কাজ শেষ। সাতমসজিদ রোড, মিরপুর রোড, ২৭ নম্বর রোড, দুই নম্বর রোডের মধ্যবর্তী এলাকায় মোট ১০৫ কিলোমিটার এলাকাকে প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্প হিসেবে হাতে নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৫ বছরের প্রকল্প হলেও তিন বছরের মধ্যে কিছু এলাকা তারবিহীন করা যাবে বলে আশা করছে ডিপিডিসি।

এছাড়া, কেরানীগঞ্জের কিছু এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলিং করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে, সেটি এখনও শুধু কাগজপত্রেই সীমাবদ্ধ। কাজ করার কথা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের। কিন্তু আলোচনা হলেও তা এখনও আলোর মুখ দেখেনি।

/এমএনএইচ/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
কুমিল্লা শিক্ষা প্রকৌশল কার্যালয়ে ঠিকাদারকে মারধর২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ