X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণের দায়িত্ব বিইআরসিকে ফিরিয়ে দিতে হবে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৯ এপ্রিল ২০২৩, ২০:৫৫আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ২১:২২

বিদ্যুৎ ও জ্বলানির দাম কমাতে হলে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। ফসিল ফুয়েলের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে জোর দিতে হবে। পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণের দায়িত্ব বিইআরসিকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) সিরডাপ মিলনায়তনে ক্যাব আয়োজিত ‘জ্বালানি সংকট ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন’ শীর্ষক এক সভায় বক্তারা এসব দাবি জানান। সভায় ক্যাব ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করে।

সভায় বক্তব্য দেন ক্যাবের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অভিযোগ অনুসন্ধান এবং গবেষণা কমিশনের সদস্য এম এম আকাশ, বদরুল ইমাম, সুশান্ত কুমার দাশ, ইকবাল হাবিব, আইনবিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।

ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাশেদ খান। আরও বক্তব্য দেন বাসদের সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিডির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, শামসুল হুদা, দিলীপ বড়ুয়া, মনোয়ার মোস্তফা প্রমুখ।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘এখন বিদ্যুতের উৎপাদন হচ্ছে কিন্তু ব্যবহার করতে পারছি না। বসে থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে। এতে বিদ্যুতের দাম বাড়ে। আমাদের উচিত দাম যাতে না বাড়ে, সে উদ্যোগ নেওয়া।’

শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুতের কমবেশি ৭ শতাংশ হারে সরবরাহ বৃদ্ধি হলেও উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে ১২ শতাংশ। জ্বালানির অভাবে বিদ্যুতের উৎপাদন কম হচ্ছে। এতে ভোক্তারা অসহনীয় মূল্য বৃদ্ধির কবলে পড়ছে। এ জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হলে আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ক্ষমতা বিইআরসির কাছে দেওয়া হলে প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে।

এম এম আকাশ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে প্রতিবছর বিদ্যুতের ব্যবহার ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে, আর উৎপাদন বেড়েছে ১২ শতাংশ হারে। এতে করে অনেক বিদ্যুৎ অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। যার ফলে বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। সরকার সম্প্রতি বিইআরসির ক্ষমতা খর্ব করেছে। বিইআরসি যখন দাম নির্ধারণ করে সেখানে কিছুটা হলেও স্বচ্ছতা থাকে, জবাবদিহিতা থাকে। 

ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, বিইআরসিকে বিলুপ্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। ক্যাবের পক্ষ থেকে তীব্র আপত্তি থাকলো। বিইআরসির কোনও সীমাবদ্ধ থাকলে সেগুলো দূর করতে হবে। আমরা চাই বিইআরসি জনগণের কথা বলুক।

ক্যাবের ১৩ দফার মধ্যে রয়েছে— সরকার ব্যক্তি খাতের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িত হবে না এবং সরকারি মালিকানাধীন কোনও কোম্পানির শেয়ার ব্যক্তি খাতে হস্তান্তর করবে না, আইন দ্বারা তা নিশ্চিত হতে হবে। বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি খাতভুক্ত সরকারি ও যৌথ মালিকানাধীন সব কোম্পানির পরিচালনা বোর্ড থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উভয় বিভাগের সব আমলাকে প্রত্যাহার করা। নিজস্ব কারিগরি জনবল দ্বারা স্বাধীনভাবে উভয় খাতের কোম্পানি/সংস্থাগুলোর কার্যক্রম পরিচালিত হতে হবে। সে জন্য আপস্ট্রিম রেগুলেটর হিসেবে মন্ত্রণালয়কে শুধু বিধি ও নীতি প্রণয়ন এবং আইন, বিধি-প্রবিধান অনুসরণ ও রেগুলেটরি আদেশগুলো বাস্তবায়নে প্রশাসনিক নজরদারি ও লাইসেন্সধারীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে এবং ডাউনস্ট্রিম রেগুলেটর বিইআরসিকে সক্রিয়, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে। মুনাফা ছাড়া কস্ট বেসিসে ৫০ শতাংশের অধিক বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন সরকারি মালিকানায় হতে হবে।

কস্ট প্লাস নয়, সরকার শুধু কস্ট বেসিসে বিদ্যুৎ, ও জ্বালানি সেবা দেবে। গ্যাস উন্নয়ন তহবিল, বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিল, জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিলের অর্থ যথাক্রমে গ্যাস অনুসন্ধান, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জ্বালানি আমদানিতে ব্যয় ভোক্তার ইকুইটি বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হতে হবে। প্রাথমিক জ্বালানি মিশ্রে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনায় কয়লা ও তেলের অনুপাত কমাতে হবে। নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধান ও মজুত বৃদ্ধি এবং নবায়যোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন দ্বারা জ্বালানি আমদানি নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। জলবায়ু তহবিলসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উৎস থেকে উক্ত ক্ষয়ক্ষতি বাবদ ঋণ নয়, ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি/আদায় নিশ্চিত হতে হবে এবং সে ক্ষতিপূরণ ক্ষতিগ্রস্তদের সক্ষমতা উন্নয়নে বিনিয়োগ আইন দ্বারা নিশ্চিত হতে হবে। বিদ্যুৎ, জীবাশ্ম ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন নীতি, আইন, বিধিবিধান ও পরিকল্পনা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সম্পাদিত প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

/এসএনএস/এনএআর/
সম্পর্কিত
দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশকে ঋণের শর্তে আটকে ফেলেছে: ক্যাব
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহী অস্ট্রিয়া
‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৪০ শতাংশে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে’
সর্বশেষ খবর
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা