X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১
আলোচনা সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী

টিনেজ অর্থনীতি বিকাশের প্রধান উৎস হবে শক্তিশালী পুঁজিবাজার

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৪ জুন ২০২৩, ১৭:৪৫আপডেট : ০৪ জুন ২০২৩, ১৮:২২

বাংলাদেশের অর্থনীতিকে টিনেজারের সঙ্গে তুলনা করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি অত্যন্ত শক্তিশালী, এতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে আমাদের অর্থনীতি টিনেজার অর্থনীতি। টিনেজার হওয়ায় এর একটা উদ্যম রয়েছে, কিছুটা লাফালাফিও রয়েছে। তাই এটিকে নজরদারি করতে হচ্ছে। আমাদের মতো বিকাশমান অর্থনীতিতে মূলধনের জোগান দিতে পারে শক্তিশালী পুঁজিবাজার। তাই বাজেটে ক্যাপিটাল মার্কেট অবহেলিত হওয়া ঠিক নয়।

রবিবার (৪ জুন) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) যৌথ উদ্যোগে সিএমজেএফ অডিটরিয়ামে বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরও বাজেটে পুঁজিবাজার নিয়ে নতুন কোনও আলোচনা না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করে আগের দাবিগুলোই আবার তুলে ধরেন বক্তারা। তারা বলেন, বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য নতুন কোনও কিছু আরোপ করা না হলেও কোনও প্রণোদনাও দেওয়া হয়নি। বিশেষ করে বাজেটে পুঁজিবাজার সম্পর্কে কোনও আলোচনা না থাকায় আমাদের মনে হচ্ছে এ খাতটি সরকারের কাছে একেবারেই অবহেলিত। এতে বিনিয়োগকারীরাসহ খাত সংশ্লিষ্ট সবাই হতাশ হয়েছে।

সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় ‘বাজেট ২০২৩-২৪: প্রেক্ষিত পুঁজিবাজার’ শীর্ষক সভায় সূচনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি  মো. ছায়েদুর রহমান। সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ হাসান বাবু, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও।

গত ১ জুন জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশের অর্থনীতিকে টিনেজারের সঙ্গে তুলনা করে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, টিনেজারদের যেমন মা-বাবাকে নজরদারি করতে হয় তেমন আমাদেরও গ্রোয়িং অর্থনীতিকে নজরদারি করতে হচ্ছে, এটাকে ফিডিং করতে হচ্ছে। আর এই ফিডের প্রধান উপকরণই হচ্ছে ক্যাপিটাল। যে যাই বলুক না কেন এটার (অর্থনীতির) দরকার মানি, মানি এবং মানি। মানি কয়েক রকম হয়। তরল মানি, এসেট ও ফ্রোজেন মানি। এসব অর্জন হবে যদি আমরা ক্যাপিটাল মাকের্টে শক্তি বৃদ্ধি করতে পারি।

তিনি আরও বলেন, স্টক মার্কেট বাজেটে অবহেলিত এটি একটি বড় মেসেজ, আপনাদের পক্ষ থেকে আমি সংশ্লিষ্টদের কাছে এটি পৌঁছে দেবো। এছাড়া আমি আপনাদের দাবিগুলো শুনলাম, এগুলো নিয়ে আমি সংশ্লিষ্টদের আলোচনা করবো।

মন্ত্রী বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট ডমিনেন্ট বা ড্রাইভ দিতে পারে এমন অর্থনীতি আমাদের হয়নি। আমরা সেদিকে যাচ্ছি। উই আর অন দ্য ওয়ে। উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে যেতে হলে প্রয়োজন অর্থের। পুঁজিবাজার সেই অর্থায়নের উৎস হতে পারে। আমরা সেদিকে যাবো, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে আমাদের অভিযাত্রা শুরু হবে।

মন্ত্রী পুঁজিবাজার বিষয়ক দাবিগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, আমি মনে করি এখন আমরা যে পর্যায়ে পৌঁছেছি আমাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আগের তুলনায় অনেক দক্ষ, আমাদের বেটার টেকনোলজি, বেটার বিজনেস কমিউনিটি রয়েছে। তাই এখন আর অগ্রিম আয়কর (এআইটি) দরকার নেই, এটি তুলে দেওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট অথরিটি সবার সঙ্গে আলোচনা করে এটি তুলে দিতে পারে।

দ্বৈত কর থাকা উচিত নয় বলেও তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, এটি কেন হবে, একজন মানুষ ট্যাক্স তো একবারই দেবে। এটির কারণ ব্যাখ্যা হওয়া করা উচিত, এর গভীরে গিয়ে দেখা উচিত।

এছাড়া মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে লিস্টেড হওয়া উচিত বলেও তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, এই আলোচনা সাত আট বছর আগেও শুনেছি। এখনও শুনছি। কিন্তু বছরের পর বছর তারা লিস্টেড না হয়েই ব্যবসা করছে আমাদের দেশে। এ বিষয়ে আমাদের আরও চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

বর্তমানে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্য ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, টেলিকম, ট্যোবাকো ইত্যাদি খাত এর আওতার বাইরে। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য বাড়ানোর দাবি করেন বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান।

এছাড়া তিনি লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত কর প্রত্যাহার, বন্ডের ওপর অগ্রিম চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করা, লেনদেন কর নামিয়ে ০.০১৫ শতাংশ (শূন্য দশমিক শূন্য ১৫) করার, যা বর্তমানে ০.০৫ শতাংশ (শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ) রয়েছে, দাবিও জানান। বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডকে পুঁজিবাজার এক্সপোজারের বাইরে রাখলে পুঁজিবাজার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি দাবি জানান।

ছায়েদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য বাজেটের ভালো দিক হলো নতুন করে কোনও কিছু আরোপ করা হয়নি। তবে হতাশার ও খারাপ দিক হলো পুঁজিবাজারের জন্য কোনও প্রণোদনাই নেই, এমনকি পুঁজিবাজার সম্পর্কে কোনও আলোচনাও নেই।

পৃথিবীর অনেক দেশই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে পুঁজিবাজার। কিন্তু সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কেন যেন আমাদের দেশের পুঁজিবাজার সেই অবস্থানে যেতে পারছে না জানিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএইসই) চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু বলেন, সরকারের একটু নীতি সহায়তা পেলে আমাদের পুঁজিবাজার অনেক কিছুই দিতে পারবে। এখানে সেই সম্ভাবনা রয়েছে। রাজস্ব আহরণ পুঁজিবাজার থেকেই বড় জোগান দিতে পারবে।

/এসআই/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
পুঁজিবাজার নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যেভাবে চলতো কারসাজি
৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা বেড়েছে ৫১২ কোটি টাকা
আগামী বাজেট হবে ৮ লাখ কোটি টাকার
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ