ফেনীতে মানুষকে করোনা ঝুঁকি থেকে রক্ষায় মাস্ক পরায় বাধ্য করতে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। প্রশাসন সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি আইন লঙ্ঘনকারীদের জরিমানা অব্যাহত রেখেছে। চলতি বছরের মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মাস্ক না পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অপরাধে ফেনীতে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে ১ হাজার ৩শ’ ৯৮ জনকে। কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ২ জনকে। মামলা হয়েছে ১ হাজার ৩শ’ ৯৮টি।
ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান শনিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে ৩৬৫টি। দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮, ২৬৯ সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর কতিপয় ধারায় জরিমানা করা হয়েছে ১৭ লাখ ২১ হাজার ৫’শ ৫০ টাকা।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, মার্চ মাসে ৩০টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১২০টি মামলার বিপরীতে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ১শ’ ৫০ টাকা, এপ্রিলে ১৪৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩৮৮টি মামলার বিপরীতে ৩ লাখ ১৩ হাজার ২শ’ টাকা, মে মাসে ৫৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২২৬টি মামলার বিপরীতে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা, জুনে ৩০টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১৯৫টি মামলার বিপরীতে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, জুলাইতে ২৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১১৩টি মামলার বিপরীতে ৯৬ হাজার ৮শ’ ৫০ টাকা, আগস্টে ৩৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২১৮টি মামলার বিপরীতে ২ লাখ ৭২ হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা জরিমানাসহ ২ জনকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়, সেপ্টেম্বর মাসে ১৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৪৪টি মামলার বিপরীতে ১ লাখ ২৪ হাজার ৩শ’ টাকা, অক্টোবরে ৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১২টি মামলার বিপরীতে ২ হাজার ২শ’ টাকা, সর্বশেষ নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত ১৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮০টি মামলার বিপরীতে ১ লাখ ১২ হাজার ২শ’ টাকা জরিমানা করা হয়।
ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন, চলতি মাস থেকে এ কর্মকাণ্ড আরও জোরালো করা হয়েছে। সম্ভাব্য দ্বিতীয় ডেউ ঠেকাতে নিজেদের সক্ষমতা নির্ণয়ের পাশাপাশি সতর্কতামূলক প্রচার-প্রচারণায় জোর দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পৌরসভা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। অফিস-আদালত, শহর, হাট-বাজারসহ সর্বত্র যেন মাস্ক ব্যবহার করা হয় সেজন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতিটি দফতরের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট কার্যালয় এবং দর্শনীয় স্থানে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নাগরিক সচেতনতায় বিলবোর্ড ও স্টিকার লাগানো হয়েছে।
মাঠ পর্যায়ে অভিযান পরিচালনাকারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান বলেন, জেলা প্রশাসনের অভিযানের ফলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরতে অভ্যস্থ হচ্ছে। তবে এর ভিন্ন চিত্রও রয়েছে। যখন অভিযান চালানো হয় তখন অনেকে পকেট থেকে বের করে মাস্ক পরেন। এ বিষয়ে সবার সচেতনতা দরকার। নিজেদের প্রয়োজনেই মাস্ক পরতে হবে।