‘আমাদের আইয়ুব বাচ্চু দেশবরেণ্য শিল্পী হয়েছিল। কিন্তু এত বড় শিল্পী হওয়ার পরও সে আমাদের খুব শ্রদ্ধা করতো। বাচ্চু বলতো, আপনি তো মামা, মানে মা মা, দুইটা মা। পায়ে ধরে সালাম করতো। খুব দানবীর ছিল। ৬০টা গিটার ছিল তার। এগুলো নিলামে দিয়েছিল। পরে সেটা বন্ধ করে দেয়। আমাকে বলেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে দিতে চায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে কথা বলতে। পরে সেটা আর হয়ে ওঠেনি। তার মনোবল খুব শক্ত ছিল। আমরা সবার কাছে তার জন্য দোয়া চাই।’ আইয়ুব বাচ্চুর মামা আব্দুল হালিম লোহানী শনিবার সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
শেষ সজ্জায় শায়িত হতে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ এখন চট্টগ্রামে। শিল্পীর ইচ্ছানুযায়ী তাকে চট্টগ্রামের এনায়েত বাজারে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে। তবে দাফনের আগে শেষ বারের মতো তাকে নেওয়া হয় মাদারবাড়িতে তার নানার বাড়িতে। সেখানে জড়ো হন অগণিত ভক্ত, শিল্পী, স্বজনরা। নানার বাড়ি থেকে তার মরদেহ জানাজার জন্য নেওয়া হবে জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে। জানাজা শেষে তাকে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে আহনাব তাজোয়ার আইয়ুব দেশবাসীর কাছে তার বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন।
এদিকে শনিবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে শাহ আমানত বিমানবন্দরে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ পৌঁছানোর পর তা গ্রহণ করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। মরদেহ নিয়ে আইয়ুব বাচ্চুর নানান বাড়িতে পৌঁছার পর চসিক মেয়র বলেন, আইয়ুব বাচ্চুর নামে চট্টগ্রাম মুসলিম হলের নামকরণের চেষ্টা করবেন তিনি। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন এলাকায় একটি সড়কের নামকরণেরও আশ্বাস দেন তিনি। মেয়র জানান, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তারা আইয়ুব বাচ্চুকে নাগরিক সংবর্ধনা দেবেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেছেন গুণী এই শিল্পী। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১৬ অক্টোবর রাতে রংপুরে একটি কনসার্ট শেষ করে ১৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকায় ফেরেন আইয়ুব বাচ্চু। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাসায় হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। তড়িঘড়ি তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।