গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এবং কালীগঞ্জে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুটি মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ উপজেলা ও পৌর বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অজ্ঞাত দুই শতাধিক নেতাকর্মীদেরকে আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলায় পুলিশ পৌর বিএনপি নেতা ও কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দুটি রুজু করা হয়। সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল মান্নান শেখ মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী কালিয়াকৈর পৌরসভার কালামপুর এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে। চন্দ্রা এলাকায় কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে মিছিল থেকে ওই কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে তারা ১৪-১৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিএনপির নেতাকর্মীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। মামলা দায়েরের পর ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আকুলকে গ্রেফতার করে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, ইটপাটকেল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে ওই রাতে অভিযান চালিয়ে আসামি সারোয়ার হোসেন আকুলকে গ্রেফতার করা হয়। এজাহারনামীয় অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, কালীগঞ্জে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৯০ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়। কালীগঞ্জ পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রহমান আশরাফি খোকন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার বাদী জানান, সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় তিনিসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৮-১০ জন নেতাকর্মী বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখে কালীগঞ্জ বাজার থেকে ফিরছিলেন। সে সময় তারা বাইপাস (ভাদার্তী) মোড়ে পৌঁছালে আসামিরা এবং তাদের অজ্ঞাত ৯০ জন সহযোগী পথরোধ করে মারধর করে। একপর্যায়ে তাদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশে দলীয় নেতাকর্মীদের অংশ নেওয়া ঠেকাতে এ মামলা করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী একযোগে মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগে মামলা দায়েরের উৎসবে মেতেছে।
কালীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) খন্দকার সোহেল রানা জানান, এজাহারনামীয় আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।