X
শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫
২১ আষাঢ় ১৪৩২

রহিমার আত্মগোপনের পরিকল্পনা হয় ঢাকায় মরিয়মের বাসায়

খুলনা প্রতিনিধি
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:০৫আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৩৭

খুলনার রহিমা বেগম অপহরণের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই)। যা অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই এই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। রহিমা বেগমের আত্মগোপনের ২৫ দিন আগে ঢাকায় মরিয়মের বাসায় বসে পরিকল্পনা করা হয় বলে পিবিআই জানিয়েছে।

মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রহিমা বেগম অপহরণের পরিকল্পনা মরিয়ম মান্নান আগেই জানতেন। এ জন্য মরিয়ম মাকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা পাঠিয়েছিলেন।’

খুলনা পিবিআই পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে কেউ অপহরণ করেনি। বরং পরিকল্পিতভাবে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। আর এই পরিকল্পনার মূল হোতা ছিলেন মরিয়ম মান্নান।’

পিবিআই জানায়, প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত ঝামেলা নিয়ে রহিমা বেগম আদালতে মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় প্রতিবেশীরাই জিতে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া রহিমার জমির অংশ তার মেয়েরা লিখে নিয়েছিলেন। তাই প্রতিবেশীদের ফাঁসাতেই তারা এই চক্রান্ত করেছিলেন।

পিবিআই আরও জানায়, ফুলপুরে গিয়ে মরিয়ম মান্নান সম্পূর্ণ নাটক করেছিলেন। যা তাদের চক্রান্তের একটি অংশ ছিল। তারা অজ্ঞাত লাশকে মা হিসেবে দাবি করেন। মামলাটিতে মরিয়ম মান্নান ও তার মা রহিমার বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন রহিমার ছেলে মিরাজ ও দ্বিতীয় স্বামী বেলাল হাওলাদার। ছেলে মিরাজ মায়ের বিচার চেয়ে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

রহিমা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী বেলাল হাওলাদার আদালতে জানিয়েছেন, মরিয়ম মান্নান তাকে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিতে বলেছিলেন। তিনি মরিয়মের কথায় রাজি না হওয়ায়, পুলিশকে চাপ দিয়ে তাকে গ্রেফতার করানো হয়েছিল।

পিবিআই জানায়, রহিমা বেগম অপহৃত হয়েছিলেন বলে কোনও তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং তিনি নিজেই আত্মগোপনে গিয়েছিলেন বলে একাধিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। নিখোঁজের ২৫ দিন আগে ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় মেয়ে মরিয়ম মান্নানের বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বসেই তারা সাজিয়েছিলেন এই নাটক।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন বলে মরিয়ম মান্নান ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রচার করেন। ২৭ আগস্ট রাত সোয়া ২টার দৌলতপুর থানায় মায়ের অপহরণ হওয়ার কথা উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী। পরে মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্টে দৌলতপুর থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী আক্তার। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর রাতে মরিয়ম নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন মায়ের লাশ পেয়েছেন। পরে ২৩ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানায় গিয়ে লিখিত দেন ওই লাশ তার মায়ের। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হতে মরিয়মের ডিএনএ টেস্ট করেছিল পুলিশ। ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুর থেকে রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি মেয়ে আদুরী আক্তারের জিম্মায় খুলনা শহরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।

/এমএএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জয়ের পর মনিকা চাকমা বললেন, ‘আজ অনেক ভালো লাগছে’
জয়ের পর মনিকা চাকমা বললেন, ‘আজ অনেক ভালো লাগছে’
ঢাকায় উদযাপিত হলো উল্টো রথযাত্রার শোভাযাত্রা
ঢাকায় উদযাপিত হলো উল্টো রথযাত্রার শোভাযাত্রা
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল
বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে এই ৪ খাবার
বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে এই ৪ খাবার
সর্বাধিক পঠিত
জামায়াতের অনুষ্ঠানে ‘সৎ’ লোককে ভোট দিতে বলা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা
জামায়াতের অনুষ্ঠানে ‘সৎ’ লোককে ভোট দিতে বলা পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আ.লীগ নেতা বাবাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ
ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আ.লীগ নেতা বাবাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ
সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন