বুদ্ধ পূর্ণিমাসহ সরকারি তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকত। গত বৃহস্পতিবার (৪ মে) থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেন। ইতোমধ্যে আবাসিক হোটেলগুলোর ৭০-৮০ ভাগ কক্ষ বুকিং হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, নানা বয়সের হাজারো পর্যটক তীরে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের তালে তালে নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছেন। সমুদ্রের নোনা পানিতে গা ভাসিয়ে ভ্যাপসা গরমে একটু প্রশান্তির পরশ নিচ্ছেন আগতরা। কেউ কেউ ওয়াটারবাইকে গভীর সমুদ্রে গিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। কেউ কেউ টিউব ভাড়া নিয়ে সাগরের নোনা জলে সাঁতার কাটছেন। কেউ ঘোড়ায় চড়ে সৈকতে ঘুরছেন এবং ছবি তুলছেন। অনেকে আবার মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে ১৮ কিলোমিটার সৈকত চষে বেড়াচ্ছেন। বয়স্ক পুরুষ-নারী পর্যটকরা সৈকতের ছাতার নিচে বসে ঢেউ উপভোগ করছেন।
আমতলীর গাজীপুরা থেকে লুনা নামের এক পর্যটক সপরিবারে বেড়াতে এসেছেন কুয়াকাটায়। লম্বা ছুটি পেলেই তিনি পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন। তিনি বলেন, ‘সাগরের ঢেউয়ে গোসল করতে খুব ভালো লাগে। তাই বার বার চলে আসি।’
বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে একটি মবিল কোম্পানির সারা দেশ থেকে ১১০ জনের একটি টিম এসেছেন। আবাসিক হোটেল গ্রেভার ইনে উঠেছেন তারা। তিন দিন থাকবেন কুয়াকাটায়। প্রথম দিন তারা আনন্দ উল্লাস করছেন। শুক্র ও শনিবার দুদিন হোটেলের হলরুমে বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার সভা করবেন। শনিবার বিকালে তারা ফিরে যাবেন।
সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকার পাশাপাশি রাখাইন পল্লি, রাখাইন মহিলা মার্কেট, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ সীমাঘর, ঝাউবাগান, গঙ্গামতির লেক, গঙ্গামতিরচর, কাউয়ারচর, লাল কাকড়ার চর, লেম্বুরবন, আন্ধারনামিক নদীর মোহনাসহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্টগুলোতে আশানুরূপ বুকিং হয়েছে। ঝিনুক মার্কেট, খাবার হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠাগুলোতে বেচাকেনার ধুম পড়েছে। খুব খুশি ব্যবসায়ীরা।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আলমাস হাওলাদার বলেন, ‘আজও প্রচুর পর্যটক আসছে। বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।’
আবাসিক হোটেল সী-ভিউয়ের ম্যানেজার সোলায়মান ফরাজী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার হোটেলের সবগুলো কক্ষ বুকিং আছে। শনিবার কিছু কক্ষ খালি আছে। আশা করছি বুকিং হয়ে যাবে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘টানা তিনদিনের ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপর রয়েছে। সবগুলো স্পটে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’