সৌর প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বাগেরহাটের মোংলা পোর্ট পৌরসভায় দেশের প্রথম ভাসমান বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১৯ সালে। সে সময় এখান থেকে ১০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এরপর এই প্রকল্পের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জোগান দেওয়ার কাজ শুরু করার কথা ছিল। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চূড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়ায় সেই কাজ শুরু করা যায়নি।
জানা গেছে, মোংলা পোর্ট পৌরসভার পানি শোধনাগারের ৮৯ একর জমির ওপর খনন করা দুটি পুকুর এবং সংলগ্ন এলাকায় দুই বছরের মধ্যে এই ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সোলার ইপিসি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের এই প্রকল্পের কাজ করার কথা।
ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইজাজ আল কুদরত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প এটি। শুরুতে ২০১৯ সালে ভাসমান সৌর প্যানেল নির্মাণ করে ১০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। উৎপাদিত সেই বিদ্যুৎ দিয়ে পৌরসভার পানির প্রকল্পের মোটরপাম্প চালানো হচ্ছে। ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এই প্রকল্পের কাজ করার কথা ছিল। এ জন্য ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় সেই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। প্রকল্পটি চালু হলে এখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করার কথা ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পটির অনুমোদন মিললে ছয় মাসের মধ্যেই জাতীয় গ্রিডে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জোগান দেওয়া সম্ভব হবে।’ তবে কবে নাগাদ এই প্রকল্পের অনুমোদন মিলবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) মোংলার আবাসিক প্রকৌশলী এইচ এম ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হলে বিদ্যুতের কিছুটা ঘাটতি কমবে। প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।’
জানা গেছে, সোলার প্যানেলের সাহায্যে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার তুলনায় এটি হবে আরও সাশ্রয়ী। এর ফলে পানিও কম বাষ্পীভূত হবে। এতে প্রচুর পরিমাণ পানি জলধারেই থেকে যাবে। খরা মৌসুমে জলধারে পানির সংকটের কারণে কৃষিকাজে যে সমস্যা হয়, এরও অনেকটা সমাধান সম্ভব।’
মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন, ‘মোংলা বন্দরের পানির প্রজেক্টের ওপর সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হলে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। এতে দেশের বিদ্যুতের ঘাটতি কিছুটা পূরণ হবে।’
দ্রুত এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন চেয়ে তিনি আরও বলেন, ‘২০১৯ সালে ১০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর এই সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। এটি আবারও চালু করতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাচ্ছি।’