অ্যানেস্থেসিওলজিস্টদের ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে সব ধরনের অপারেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন বেসরকারি ক্লিনিক, হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতি। এ জন্য বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রাজশাহী নগরীতে অপারেশন বন্ধ থাকবে। ফি না কমানো পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন বাংলাদেশ বেসরকারি ক্লিনিক, হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির রাজশাহীর শাখার নেতৃবৃন্দ।
মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘অ্যানেস্থেসিওলজিস্টরা যে নতুন ফি নির্ধারণ করেছেন, তা বর্তমান ফির চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। তাদের এই টাকা নির্ধারণ করা হলে রোগীসহ বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বসেছি। কিন্তু তারা দাবিতে অনড়। রোগীর অপারেশনের খরচ একজন সার্জন ঠিক করে দেন। তারা যে টাকা বলে দেন আমরা তা নিতে বাধ্য। অপারেশনও সার্জনরা করেন। কিন্তু অ্যানেস্থেসিওলজিস্টরা যে ফি দাবি করছেন তা নিয়ে আমরা বিব্রত।’
বাংলাদেশ বেসরকারি ক্লিনিক, হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখলেছুর রহমান শাহ বলেন, ‘অ্যানেস্থেসিওলজিস্টরা যে রেট নির্ধারণ করেছেন তা বাস্তবায়ন করলে চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এমনিতেই ওষুধের দাম বেড়েছে অনেক। অন্য বিভাগীয় ও জেলা শহরের তুলনায় রাজশাহীতে অপারেশনের ফি অনেক কম। অনেক মানুষের, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের চিকিৎসা খরচ সাধ্যের বাইরে চলে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দাবির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজশাহীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে সব ধরনের অপারেশন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত আমরা রোগীদের স্বার্থেই নিয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন– বাংলাদেশ বেসরকারি ক্লিনিক, হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সভাপতি ডা. এসএমএ মান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. খন্দকার গোলাম মোস্তফা কবিরসহ বিভিন্ন ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও প্রতিনিধিরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট (বিএসএ) রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. খিজির হোসেন বলেন, ‘২০১৬ সালের পর আমাদের ফি আর বৃদ্ধি করা হয়নি। ক্লিনিক ও হাসপাতাল-মালিক পক্ষ অপারেশনের সময় অ্যানেস্থেসিওলজিস্টদের নামে রোগীদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করেন। আমরা তাদের বলেছি, আমাদের নামে নেওয়া টাকা আমাদেরই দিতে হবে।’
নতুন ফি বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সিজারিয়ান অপারেশন করতে অ্যানেস্থেসিওলজিস্টরা পান দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। আমরা সেই ফি আড়াই হাজার করার দাবি জানিয়েছি। অথচ ক্লিনিক-মালিকরা বলছেন, আমরা নাকি দ্বিগুণ ফি বৃদ্ধির দাবি করছি।’
এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট (বিএসএ) রাজশাহী শাখা বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে পারিশ্রমিকের নতুন তালিকা পাঠালে দুই পক্ষের দর-কষাকষি ও মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।