জামালপুরের সরিষাবাড়িতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা বাবুল (৬০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রবিবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান প্রবীণ এই সাংবাদিক।
সাংবাদিক মোস্তফা বাবুলের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে তানিয়া এবং জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সেলিম।
সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) জামালপুর জেলা সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি তার ৪০ বছরের কর্মজীবনে দৈনিক জনতা, সাপ্তাহিক পূর্বকথা, সাপ্তাহিক জামালপুর বার্তা, দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাংবাদিক মোস্তফা বাবুলের মেয়ে তানিয়া জানান, গত ৪ নভেম্বর সকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য জামালপুর পুলিশ লাইনসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন বাবুল। সেখানকার কাজ শেষে দুপুরে ব্যক্তিগত কাজের জন্য তিনি ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস ট্রেনে জামালপুর থেকে সরিষাবাড়ি স্টেশনে যান। পরে সেখান থেকে উপজেলার চাপারকোনা যাওয়ার জন্য একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিশায় ওঠেন। সে সময় পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেল অটোরিকশাটিকে জোরে ধাক্কা দিলে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সাংবাদিক বাবুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জামালপুর শহরের বাড়িতে আনা হয়। এ সময় অবস্থার অবনতি হলে রাতে জামালপুর শহরের ডায়াবেটিস জেনারেল হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতাল পাঠানো হয়। সেখানে ৫ নভেম্বর তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপ্রচার করা হয়। এরপর থেকে তিনি আইসিইউতে ছিলেন। সে সময় তিনি শুধু মাঝে মধ্যে চোখ খুলতেন। কথা বলতে পারতেন না। রবিবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পর রাত ১২টা ৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সাংবাদিক মোস্তফা বাবুলের এই অকাল মৃত্যুতে শোকাহত পুরো জেলার সাংবাদিক সমাজ। তারা দ্রুত অভিযুক্ত সেই মোটরসাইকেল চালককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল অত্যন্ত মেধাবী সাংবাদিক ছিলেন। তিনি শুধু সাংবাদিক ছিলেন না, তিনি একজন লেখকও ছিলেন। আজ আমরা তাকে হারিয়ে ফেললাম। সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাকে হারিয়ে আমরা সবাই শোকাহত।’
সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল ইতোপূর্বে জামালপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ তিনি জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সিনিয়র সদস্য ছিলেন।
সোমবার বাদ মাগরিব জামালপুর শহরের মডেল মসজিদে মরহুমের প্রথম জানাজার নামাজের পর মরদেহ নেওয়া হবে সরিষাবাড়ি উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থল গ্রামে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।