X
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বিদ্যালয়ে শিক্ষিকার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:৫৩আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:৫৩

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে রোকেয়া বেগম (৫৫) নামে এক শিক্ষিকার মরদেহ নিয়ে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা। এমপিওভুক্তির নামে ওই শিক্ষিকার কাছ থেকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে কাজিপুর উপজেলার গোদাগাড়ী চকপাড়া গাড়াবের বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত স্কুলশিক্ষিকা রোকেয়া বেগম উপজেলার গাড়াবেড় গ্রামের খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। তিনি জিসিজি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক শাখার ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন।

এমপিওভুক্তির কথা বলে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি কাজিপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ বাবলু এবং প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম দফায় দফায় তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে স্বজনরা অভিযোগ করেছেন।

মৃত শিক্ষিকার ভাই মিজানুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৮ সালে গোদাগাড়ী চকপাড়া গাড়াবেড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে রোকেয়া বেগম ইংরেজি শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্তির কথা বলে প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দ্বীন মোহাম্মদ বাবলু তার কাছ থেকে দফায় দফায় প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সম্প্রতি তিনি বোর্ডে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেন তার এমপিওভুক্তি হয়নি। ইংরেজি শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিলেও বোর্ডে গিয়ে দেখেন তাকে সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বোর্ড থেকে ফিরে এসে রোকেয়া সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের কাছে ওই টাকা ফেরত চান। টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করায় টেনশনে গত ৩০ জানুয়ারি আমাদের বাড়িতে স্ট্রোক করেন। তাকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তিনি  মারা যান। মৃত্যুর পর তার মরদেহ এলাকায় আনা হলে স্বজনরা লাশ নিয়ে স্কুলমাঠে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’

রোকেয়া খাতুনের স্বামী আব্দুল করিম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ঘর করার কথা বলে আমার স্ত্রী ও আমার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নেন প্রধান শিক্ষক ফরিদুল। এরপর আমি স্কুল থেকে সরে আসলেও আমার স্ত্রী ঠিকই থাকে। বেতনভুক্ত করে দেওয়ার কথা বলে পরে দফায় দফায় টাকা নিয়েছে তারা। এই শোকে আমার স্ত্রী স্ট্রোক করে মারা গেলেন।’

কাজীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মজিদ বলেন, ‘মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, মৃত শিক্ষিকার নিয়োগ বৈধ হয়নি। তার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষিকার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করছেন স্বজনরা। এ নিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে ঝামেলা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে ইউএনও সাহেব উপস্থিত ছিলেন।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘রোকেয়ার টাকা দিয়েই আমরা বিদ্যালয়ের ঘর উঠাই। বেতন করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় টাকাও নিয়েছি। আমরা রোকেয়ার চার লাখ টাকা ফেরত দেব আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।’

এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ বাবলু বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং মীমাংসা হয়ে গেছে। স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গেছেন।’

কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘শিক্ষিকার লাশ নিয়ে বিদ্যালয়ে অবস্থানের খবরে ঘটনাস্থলে যাই। প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের সভাপতির সঙ্গে কথা বলি। তারাও টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে চার লাখ টাকা ফেরত দেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মৃত ওই শিক্ষিকার নিয়োগের কোনও কাগজপত্রই দেখাতে পারেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। পরবর্তী সময়ে কাগজপত্র দেখে আমরা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবো। তারাই যাবতীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

/এমএএ/
সম্পর্কিত
মাকে হত্যার দায়ে ছেলে-পুত্রবধূর মৃত্যুদণ্ড
ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
যমুনায় পানি বেড়ে ধসে পড়েছে বাঁধ, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সর্বশেষ খবর
হীরামান্ডি: নিন্দার মুখে শারমিন, পাশে দাঁড়ালেন রিচা
হীরামান্ডি: নিন্দার মুখে শারমিন, পাশে দাঁড়ালেন রিচা
রাজধানীতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
রাজধানীতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
টঙ্গীতে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন
টঙ্গীতে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন
প্রতিবার চক্রান্ত মোকাবিলা করে বেরিয়ে আসি, এটা ধরে রাখতে হবে: শেখ হাসিনা
প্রতিবার চক্রান্ত মোকাবিলা করে বেরিয়ে আসি, এটা ধরে রাখতে হবে: শেখ হাসিনা
সর্বাধিক পঠিত
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আসতে পারে আইনি ব্যবস্থা
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আসতে পারে আইনি ব্যবস্থা
এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প
এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প