বগুড়ার আদমদীঘিতে সোয়া কোটির অধিক টাকা ব্যয়ে অন্তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্কুল পরিচালনা কমিটির অভিযোগ, ভবন নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট, বালু ও পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের অন্তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কাজটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) বাস্তবায়ন করছে। এক কোটি ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৯৯ টাকা বরাদ্দে কাজ পান মোহাম্মদ সোহেল নামে এক ঠিকাদার। নির্মাণ শুরুর পর থেকেই ঠিকাদার নিম্নমানের ইট, বালু ও পাথর ব্যবহার করছেন। নির্মাণাধীন ভবনে প্লাস্টারের আগেই শ্যাওলা ধরে দেয়াল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে এসব বিষয় নিয়ে এলজিইডির প্রকৌশল বিভাগে অভিযোগ করা হয়েছে। তারপরও ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তফা হোসেন বলেন, ‘ঢালাইয়ে অতিরিক্ত বালু, নিম্নমানের ও ময়লাযুক্ত পাথর, নিম্নমানের কাদাযুক্ত বালু ব্যবহার করা হয়েছে। দুই ও তিন নম্বর ইট দিয়ে বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্মাণসামগ্রীর নমুনা সংরক্ষণের নিয়ম থাকলেও তারা তা করেনি। কাজের মান নিয়ে অভিযোগ তোলার পর মনগড়াভাবে কয়েকটি নমুনা তৈরি করেছে। প্রকৌশল অফিস থেকে যিনি দেখভালের জন্য আসেন তাকে অনিয়মের বিষয়গুলো বললে কর্ণপাত করেন না।’
একই রকম অভিযোগ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা পারভীন বলেন, ‘তারা ঢালাইয়ের কাজ রাতের আঁধারে করে থাকেন। এতেই বোঝা যায় তাদের উদ্দেশ্য সৎ নয়।’
আদমদীঘি উপজেলা প্রকৌশলী রিপন কুমার সাহা বলেন, ‘খারাপ ইট ব্যবহার করার বিষয়ে স্কুল কমিটির অভিযোগ পেয়ে ওইসব ইট ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও যদি ব্যবহার করে থাকে তাহলে ওইসব ইট ভেঙে ফেলা হবে। ঢালাইয়ের সময় আমরা ভালো পাথর দেখে এসেছিলাম, পরবর্তী সময়ে যদি খারাপ পাথর নিয়ে আসে তাহলে সেগুলো দেখে পরিবর্তন করতে বলা হবে। তা ছাড়া নির্মাণকাজ দেখভালের জন্য সেখানে আমাদের লোকজন রয়েছে।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠিকাদার মোহাম্মদ সোহেলকে ফোন দিলে না ধরায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ সাংবাদিকদের জানান, স্কুল ভবন নির্মাণে নিম্নমানের কাজ করার বিষয়টি তার জানা ছিল না। শিগগিরই সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।