ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ শিশু তাইফা (৮) মারা গেছে। এ দুর্ঘটনায় তার বাবা বশির দগ্ধ হয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বশির বরগুনা সদর উপজেলার ৩নং ফুলঝুরি ইউনিয়নের রোডপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার মেয়ে তাইফার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় লঞ্চটি বরগুনার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে। উদ্ধার হওয়া লঞ্চযাত্রীরা জানান, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর মাঝখানে পৌঁছালে হঠাৎ লঞ্চটিতে আগুন ধরে যায়। জীবন বাঁচাতে অনেকেই নদীতে লাফিয়ে সাঁতরে তীরে ওঠেন। এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪০ জনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে ফেরা বরগুনার তালতলি উপজেলার সোনিয়া বেগম (২৫) জানান, লঞ্চে আগুন লাগার সময় তিনি ইঞ্জিন রুমের ওপরে দোতলার ডেকে অবস্থান করছিলেন। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ডেক গরম হয়ে চার দিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এরপর লঞ্চের সঙ্গে বাঁধা দড়ি বেয়ে ছোট ছেলেকে নিয়ে নিচে নেমে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে তীরে ওঠেন। তবে তার মা রেখা বেগম এবং ৫ বছরের বড় ছেলে জুনায়েদ সিকদার এখনও নিখোঁজ।
এ দুর্ঘটনায় দগ্ধ ৭০ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে তাদের ভর্তি করা হয়।
আহতদের বেশিরভাগই ঝালকাঠি হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শের-ই-বাংলা হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আনিসুজ্জামান। তিনি জানান, ভর্তি রোগীদের মধ্যে সাত জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে তিন শিশুকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আহত নারী, পুরুষ ও শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসার দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আহতদের বেশিরভাগেরই শরীরের বিভিন্ন স্থান দগ্ধ হয়েছে।
এদিকে, লঞ্চে ইঞ্জিন বিস্ফোরণ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্ট গার্ড। একই কথা বলছেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসকও। তবে কী কারণে ইঞ্জিন বিস্ফোরিত হলো সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। এদিকে ঘটনার পর থেকেই লঞ্চের একজন স্টাফকেও পাওয়া যাচ্ছে না।