বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এক নার্সকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে হাসপাতাল পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন নার্সরা।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন অভিযুক্তকে বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন। টুরিস্ট পুলিশের হামলায় আহত ব্রাদার সাইফুল ইসলাম। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাত ১১টার দিকে ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য জরুরি বিভাগে এসে কাউন্টারে টিকিট চান। এ সময় তাদের সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক পুলিশ সদস্য ছিলেন। তাকে হাসপাতালের গেট থেকে ট্রলিতে নিয়ে আসা হয়। আহত রোগীর নাম জিজ্ঞাসা করায় ট্যুরিস্ট পুলিশের বরিশাল জোনাল ইন্সপেক্টর বুলবুল আহমেদ ক্ষিপ্ত হয়ে যান। আবারও রোগীর নাম জানতে চাইলে বুলবুলের নেতৃত্বে অন্য পুলিশ সদস্যরা লাথি মেরে টিকিট কাউন্টারের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন তারা। ওই রাতে চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্য সালাউদ্দিনকে চার তলায় সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সিনিয়র ব্রাদার লিংকন জানান, ঘটনার পর বিচার দাবিতে আজ সকাল ৯টা থেকে তারা পরিচালকের কক্ষের ভেতরে ও সামনে অবস্থান নেন। নিরাপত্তাসহ হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয়। বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের আশ্বস্ত করেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে ক্লোজডসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লিংকন আরো জানান, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বিশ্লেষন করলে সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে। সেখানে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুলিশ কি করেছে তার রেকর্ড রয়েছে। ওই ফুটেজ বিশ্লেষন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তারা। পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের দাবি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। এরপর পরিচালকের কক্ষ থেকে বের হয়ে সকলে কাজে যান।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, সাইফুল ইসলামের ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন তার সহকর্মীরা। তাদের পক্ষে আমরাও একই দাবি করছি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা সিসিটিভি ফুটেজসহ নার্স ও ব্রাদারদের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তকে বহিষ্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের আশ্বাসে ব্রাদার ও নার্সরা কর্মস্থলে ফিরে গেছেন।
এ বিষয়ে বরিশাল ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, প্রমাণ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দফতরের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষীকে শাস্তিসহ আইনের আওতায় আনার বিষয়টি নার্স ও ব্রাদারদের অবহিত করা হলে, তারা মেনে নিয়েছেন।