বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে মাছ ব্যবসায়ীর ট্রলার আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বাবুগঞ্জ এলাকার সুগন্ধা নদীর খেয়াঘাটে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মা ইলিশ রক্ষার অভিযান শেষে ইউএনও ও মৎস্য কর্মকর্তা স্পিডবোট নিয়ে খেয়াঘাটে আসেন। অভিযানে জাল, মাছসহ একটি ট্রলার জব্দ করা হয়। সেই ট্রলারের মালিককে ইউএনও কল করে জানান তিনি যেন ট্রলার খেয়াঘাটে না ভেড়ান। কিন্তু ট্রলার মালিক আনোয়ার হোসেন ঘাটে ট্রলার ভিড়িয়ে সেখানে থাকা ইলিশ ও জব্দ করা জাল সরিয়ে ফেলেন। ইউএনও বিষয়টি বুঝতে পেরে রাগান্বিত হলে আনোয়ার সটকে পড়েন। এরপর ট্রলারটিকেও জব্দ হিসেবে দেখিয়ে জালসহ আগুন দেওয়া হয়। মাছ অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়।
ট্রলার মালিক আনোয়ার হোসেনের দাবি, ইঞ্জিন চালু থাকায় তিনি মোবাইলের রিংয়ের শব্দ শুনতে পাননি। এ কারণে মোবাইল রিসিভ করা হয়নি। ট্রলার ঘাটে ভেড়ানো দেখতে পেয়ে মৎস্য কর্মকর্তা ও ইউএনও তাকে বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন। তখন তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরে ইউএনও তার ট্রলারে আগুন দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এতে তার তিন লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান বলেন, মা ইলিশ রক্ষার অভিযান শেষে নদীর পাড়ে এসে জব্দ করা জাল আগুনে ধ্বংস করা হয় ও মাছ বিতরণ করা হয়। এ সময় ট্রলার মালিক আনোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইউএনও এবং মৎস্য কর্মকর্তা। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আনোয়ার হোসেন সেখান থেকে সটকে পড়েন। এ কারণে ট্রলারটিও জব্দ দেখিয়ে ইউএনও’র নির্দেশে আনসার সদস্যরা ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় ট্রলারে থাকা মেশিন, গ্যাস সিলিন্ডার ও ড্রামে থাকা জ্বালানি তৈল থাকায় তা বিস্ফোরিত হয়ে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ট্রলারটি ভস্মীভূত হয়ে তলিয়ে যায়।
ওসি আরও বলেন, সেখানে কোনও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়নি। ট্রলারে কোনও আলামতও ছিল না। পরে ফায়ার সার্ভিসকে পাঠানো হয়। তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। এ ছাড়া আমার কাছে আর কোন তথ্য নেই।
ফায়ারকর্মী আব্দুল মালেক বলেন, থানার ওসি জানানোর পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। তবে কী কারণে কে আগুন দিয়েছে তা জানি না।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শিমুল রানী পালের ব্যবহৃত মোবাইল একাধিকবার কল দেওয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।