X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

তরুণ-তরুণী নিহতের ঘটনায় দুই পরিবারে শোকের মাতম

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২৩:০৪আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ০১:৪৮

চট্টগ্রামের রাউজানে প্রেমঘটিত বিষয়ে তরুণ-তরুণী নিহতের ঘটনায় উভয়ের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলে জয় বড়ুয়াকে (২৫) হারিয়ে পাগলপ্রায় পিতা নিলেন্দু বড়ুয়া নিলু।

তিনি বলেন, ‘এভাবে যে আমাদের একা করে চলে যাবে তা কখনও ভাবতেই পারিনি। তার যদি কারও সঙ্গে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক থাকতো তাহলে বললেই হতো। আমি মেয়ের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতাম।’ জয়ের প্রাণহানির ঘটনায় চলছে স্বজনদের আহাজারি।

মাত্র কয়েকশ’ গজ অদূরে নিহত কলেজছাত্রী অন্বেষা চৌধুরী আশার (২৩) ঘর। সেখান থেকেও ভেসে আসছে কান্নার রোল। কান্নার শব্দ এই দুই ঘরের মাঝের দূরত্বকে মিশিয়ে দিয়েছে। একই শোকে আচ্ছন্ন করেছে উভয় পরিবারকে। মা-বাবার সঙ্গে দূর-দূরান্ত থেকে আসা স্বজনরাও কান্নাকাটি করছেন। বিকালে সরেজমিনে রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের মহামুনি গ্রামে গিয়ে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে।

এর আগে, রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে মহামুনি গ্রামের ভগবান দারোগা বাড়ির সুব্রত বড়ুয়ার খালি ঘরের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয় জয় বড়ুয়া ও অন্বেষা চৌধুরী আশার লাশ। 

পুলিশ জানায়, গলায় ওড়না পেঁচানো ও গলায় ছুরি ঢোকানো অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিল আশার লাশ। ওই লাশের ঠিক ওপরে ফ্যানের সঙ্গে পরনের শার্ট গলায় পেঁচিয়ে ঝুলে ছিল জয় বড়ুয়া।

জয় পাহাড়তলী ইউনিয়নের মহামুনি বড়ুয়া পাড়ার নিলেন্দু বড়ুয়া নিলুর ছেলে। অপরদিকে, অন্বেষা একই এলাকার উদয়ন চৌধুরী বাড়ির রনজিত চৌধুরী বাবলুর মেয়ে। রাউজান নোয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের বিএ’র ছাত্রী ছিলেন অন্বেষা।

জয় বড়ুয়ার বন্ধু অর্ক মুৎসুদ্দি জুয়েল বলেন, ‘তাদের মধ্যে দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি বন্ধু মহল ছাড়াও এলাকার অনেক লোকজনই জানতেন।’

স্থানীয় লোকজন জানান, আগামী ১০ মার্চ ফ্রান্স প্রবাসী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার এক যুবকের সঙ্গে আশার বিয়ে হওয়ার কথা। এ উপলক্ষে আগামী ৭ মার্চ তার আশীর্বাদ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।

পাহাড়তলী শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মমতাজ মিয়া বলেন, ‘আশা আমার ছেলে-মেয়েদের পড়াতো। প্রতিদিনকার মতো রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় এসে সাড়ে ৬টায় বের হয়।’

পুলিশ বলছে, আশা টিউশনি থেকে বের হয়ে জয়ের সঙ্গে দেখা করতে সুব্রত বড়ুয়ার ঘরে যান। সুব্রতের পরিবার চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করায় ওই খালি ঘরে জয় থাকতেন। ওই ঘর থেকেই রাত ১১টার দিকে জয় ও আশার লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ধারণা করছে, তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে। একপর্যায়ে ওড়না দিয়ে আশার শ্বাসরোধ করে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এরপর জয় আত্মহত্যা করে।

আশার বাবা রনজিত চৌধুরী বাবলু বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে কারও সম্পর্ক ছিল তা জানতাম না। আমার মেয়েও কখনও বলেনি। ঘটনার দিন রবিবার সকালে আশাকে নিয়ে নোয়াপাড়া পথেরহাট থেকে বিয়ের কেনাকাটা করেছি।’

রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘তাদের মৃত্যু যে প্রেমঘটিত বিষয়কে ঘিরে হয়েছে সেটা আমরা নিশ্চিত। মেয়েটির অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে ঠিক হওয়াতে তা মানতে পারেনি জয়। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আশাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছে। এরপরও আমরা তদন্ত করছি। দেখা যাক অন্যকোনও বিষয় আছে কি-না।’

সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থল আমি পরিদর্শন করেছি। নিহতের স্বজনসহ এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা তদন্ত করে দেখছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে।’

/এফআর/
সম্পর্কিত
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
নিখোঁজের ২৫ দিন পর ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা