X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১
অবৈধ বালু ব্যবসা

রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ১৩ কোটি টাকা দিতে চান সেই চেয়ারম্যান

ইব্রাহীম রনি, চাঁদপুর
০৯ মার্চ ২০২২, ২২:৫৭আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, ০০:৩৪

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান। সাত বছর ধরে নদীর যত্রতত্র বালু উত্তোলন করলেও সরকারকে রাজস্ব দেননি তিনি। এবার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ১৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা জমা দেওয়ার আবেদন করেছেন তিনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডুবোচর খননের জন্য আদালত তাকে নির্দিষ্ট একটি মৌজায় বালু উত্তোলনের আদেশ দিলেও তা বিক্রির অনুমতি দেননি। তবু এত বছর ধরে বালু বিক্রি করছেন। এছাড়া কাউকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দিলেও কিছু বিধিনিষেধ থাকে। এক্ষেত্রে বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে বেড়েছে নদীভাঙন। সেই সঙ্গে ইলিশসহ মৎস্যসম্পদ এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

এ অবস্থায় বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। তবে অবৈধ বালু ব্যবসা অব্যাহত রাখতে তদবির করে যাচ্ছে সেলিম এন্টারপ্রাইজের মালিক চেয়ারম্যান সেলিম খান। সবশেষ বালু উত্তোলন বৈধ করতে সরকারি রয়্যালটি, ভ্যাট ও আয়কর বাবদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ১৩ কোটি টাকা ৭১ লাখ টাকা জমা দেওয়ার আবেদন করেছেন তিনি।

যদিও সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর বলছে, আদালতের যে আদেশে চেয়ারম্যান সেলিম খান বালু উত্তোলন করছেন, সেখানে তাকে বালু বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবু তিনি বছরের পর বছর বিপুল পরিমাণ বালু বিক্রি করেছেন। এখন তিনি অন্য এক ব্যক্তির মামলায় আদালতের আদেশ দেখিয়ে এখন টাকা জমা দিতে চাইছেন। যা আদালত অবমাননার শামিল ও আইনের লঙ্ঘন।

সরকারি সম্পদ রক্ষায় জেলা প্রশাসন বালু উত্তোলন বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার মধ্যেই গত ২২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে টাকা জমাদানের আবেদন করেন সেলিম খান। ওই আবেদন সূত্রে জানা গেছে, সেলিম খান বালু উত্তোলনে সরকারি রয়্যালটি, ভ্যাট ও আয়কর বাবদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নয় কোটি ১৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জমাদানের আবেদন করেছেন। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে আরও চার কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা দেওয়ার আবেদন করেছেন।

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া সেলিম খান আবেদনে উল্লেখ করেন, হাইকোর্ট বিভাগের ৫০৭৮/২০১৪ নম্বর রিট পিটিশন মামলায় ২০১৪ সালের ১০ জুন দেওয়া আদেশে প্রতি ঘনফুট বালু উত্তোলনের জন্য রয়্যালটি বাবদ সরকারি রাজস্ব খাতে জেলা প্রশাসক বরাবর ২৫ পয়সা হারে এবং বিআইডব্লিউটিএ বরাবর ১৫ পয়সা হারে রয়্যালটি জমাদানের নির্দেশনা রয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ২০১৯ সালের ২০ মার্চ ৩০ কোটি ৮৪ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের কার্যাদেশ দিলেও রয়্যালটি, ভ্যাট ও আয়কর বাবদ টাকা জমাদানের জন্য চিঠি দেওয়া হয়নি। তাই আদালতের আদেশ অনুসরণ করে ৩০ কোটি ৮৪ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের সরকারি রয়্যালটি বাবদ জেলা প্রশাসক বরাবর ২৫ পয়সা হারে সাত কোটি ৬২ লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকা, ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাবদ এক কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার ৩৭৫ টাকা এবং ৫ শতাংশ আয়কর বাবদ ১০ হাজার ১২৫ টাকাসহ নয় কোটি ১৪ লাখ ৪৩ হাজার সরকারের রাজস্ব খাতে জমাদানের আবেদন করছি।

এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিষয়ে জবাব চেয়ে সেলিম খানকে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৭৫৪৫/২০১৫ রিট পিটিশনের ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিলের আদেশে হাইকোর্ট আপনাকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দিলেও বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন কিনা তা উল্লেখ করেননি। আদালত কিংবা ভূমি মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ-সহ কোনও সরকারি সংস্থা বালু বিক্রির অনুমতি না দিলেও কীভাবে সরকারি বালু বিক্রি করে অসাধুভাবে লাভবান হচ্ছেন, তার উত্তর জানা প্রয়োজন।

জেলা প্রশাসকের চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১১-এর ১০ (৫) বিধিতে বলা হয়েছে, কার্যাদেশে ইজারাগ্রহীতা কর্তৃক পরিশোধিতব্য সমুদয় মূল্য উল্লেখ থাকবে। ইজারাগ্রহীতাকে কার্যাদেশ প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে ওই সমুদয় অর্থ (ভ্যাট, আয়কর এবং সরকার নির্ধারিত অন্যান্য করসহ) জমা দিতে হবে। আপনার আবেদনে উল্লেখ আছে, জেলা প্রশাসক ২০১৯ সালের ২০ মার্চ উল্লেখিত মৌজায় ৮৬.৩০ লাখ ঘনমিটার বালু উত্তোলনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিআইডব্লিউটিএ বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। ওই পত্রের সাত কার্যদিবস গিয়ে তিন বছর ১১ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আপনি রয়্যালটি জমা দিতে চাচ্ছেন।

পদ্মা-মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে বালু উত্তোলনে ভাঙন, এলাকাবাসীর মানববন্ধন

এত বছর পর রয়্যালটি জমা দেওয়ার আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এসব বিষয়ে পরে কথা বলি। এটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। পরে কথা বলবো’—বলে ফোন রেখে দেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা কায়সারুল ইসলাম বলেন, ‘সেলিম খান যে বালু উত্তোলন করছেন তার রয়্যালটি, ভ্যাটসহ চার কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা দেওয়ার আবেদন করেছেন। বালু উত্তোলন শুরুর এত বছর পর কেন টাকা জমা দেওয়ার আবেদন করলেন তিনি, এমন প্রশ্নের জবাবে কায়সারুল ইসলাম বলেন, ‘সেটি আমি বলতে পারবো না। এখানে টাকার কোনও বিষয় ছিল না।’

এখন কীসের ভিত্তিতে টাকা জমার বিষয়টি এলো এমন প্রশ্নের জবাবে কায়সারুল ইসলাম বলেন, ‘বোরহান খান নামে এক ব্যক্তি নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য মামলা করেছিলেন। ওই মামলার আদেশে বলা আছে, বিআইডব্লিউটিএ প্রতি ঘনফুট ১৫ পয়সা হারে এবং জেলা প্রশাসন ২৫ পয়সা হারে রয়্যালটি গ্রহণ করবে। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম খান টাকা দিতে চাইছেন। তবে তার ওই মামলায় এমন কোনও আদেশ নেই। সেজন্য আমি বলেছি, টাকা জমা নিতে পারবো না। আপনি আবেদন করলে ঢাকায় পাঠাবো। আমাদের আইন উপদেষ্টার মতামতের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০১৪ সালে আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বোরহান খান নামে একজনের সঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে তিন বছরের জন্য একটি চুক্তি করেছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। তখন বোরহান খানকে বলা হয়েছিল, এত টাকা জেলা প্রশাসক ফান্ডে, এত টাকা বিআইডব্লিউটিএ’র ফান্ডে এবং এত টাকা ভ্যাট দেবেন। বালু উত্তোলনের জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেলিম খান মামলা করেছেন ২০১৫ সালে। তাই তার বিষয়টি আলাদা। কাজেই ওই মামলার সূত্র ধরে এই মামলার টাকা জমা দেবে সেটি বললে তো গ্রহণযোগ্য হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এখন সেলিম খান সেই চুক্তির রেফারেন্স দিয়ে আবেদন করেছেন, রয়্যালটি জমা দেওয়ার জন্য, আমরা তাকে বলেছি, আপনার সঙ্গে আমাদের কোনও চুক্তি নেই। আপনাকে সরকার বালু বিক্রির অনুমতি দেয়নি। তাহলে কীসের ভিত্তিতে আপনি এত টাকা জমা দেবেন। এসব বিষয়ে আমরা তার বক্তব্য জানতে চেয়েছি।’

এ পর্যন্ত তাকে রয়্যালটি জমা দেওয়ার জন্য কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তার সঙ্গে আমাদের কোনও চুক্তি নেই। এমনকি বালু বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়নি। আদালত থেকে সেলিম খান বালু উত্তোলনের অনুমতি নিয়েছেন। তার মানে এই নয় যে তাকে বালু বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি ছাড়া বালু বিক্রি করা এক ধরনের চুরি। এছাড়া যখন কাউকে অর্ডার দেওয়া হয়, সেখানে অনেক শর্ত থাকে। এখানে সবই লঙ্ঘন করেছেন সেলিম খান।’

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সমন্বয় সভা, ইলিশ রক্ষায় টাস্কফোর্সের সভা এবং নদী রক্ষা কমিটির যে সভা হয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য এবং মতামতের রেজুলেশন ছিল। মামলা করে নদী থেকে যেভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে; এতে নদীর কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, নদী গবেষক ও ইলিশ গবেষক উল্লেখ করেছেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে বালু উত্তোলন বন্ধে মামলাগুলোর আদেশ ভ্যাকেট করতে নদী এবং ইলিশ রক্ষার জন্য আমরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নদী রক্ষা কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে বিষয়গুলো জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। আমাদের চিঠি পাওয়ার পরই ভূমি মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছে।’

বালু উত্তোলন বন্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

জাটকা রক্ষায় দুই মাস নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশনা তারা মানছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হলে মামলাগুলো স্থগিত করতে হবে। এজন্য আমরা মামলাগুলো স্থগিত করার জন্য বলেছি। মামলা না থাকলে আমরাই বন্ধ করে দিতে পারতাম। মামলাগুলো সব স্থগিত করে দিতে হবে। আমার বিশ্বাস, মামলাগুলো একটিও চলবে না, সব স্থগিত হবে এবং তাদের শাস্তি হবে। কারণ, আদালত তাদের নির্দিষ্ট এলাকায় বালু তোলার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু বালু বিক্রির অনুমতি দেননি।’ 

প্রসঙ্গত, নদীভাঙন ঠেকাতে বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর ও স্থানীয়রা বিরোধিতা করলেও বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে প্রভাবশালী ওই চক্রটি। সর্বশেষ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বালু উত্তোলনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। 

সভায় জেলা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বিআইডব্লিউটিএ’র তথ্যমতে, চাঁদপুরের নদী থেকে যে প্রক্রিয়ায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তা সঠিক হচ্ছে না। এতে নদীর ক্ষতি হচ্ছে এবং জীববৈচিত্র্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া আমাদের দিক থেকে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় বালু উত্তোলনের ফলে সরকার কোনও রাজস্ব পাচ্ছে না। সেলিম খান আদালতে মামলা করে ২০১৫ সাল থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এতে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যে বালু উত্তোলন করছে, তা তারা বৈজ্ঞানিকভাবে তুলছেন না। তারা চাহিদাভিত্তিক বালু তুলছেন। যেখানে বালু পাচ্ছে সেখান থেকেই তারা বালু তুলছেন। নদীর গতিপথ আছে। এই গতিপথের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কোথায় পানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং সেসব জায়গায় যদি ডুবোচর থাকে এবং কতটুকু গভীরতায় যেতে হবে, সেটি একটি স্তরের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু যারা বালু উত্তোলন করছেন তারা সেটি মানছেন না। তারা যেভাবে বালু উত্তোলন করছেন তা নদীর জন্য ক্ষতিকর এবং ভাঙনের জন্য দায়ী।’

এদিকে, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে ইলিশ সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে জেলা প্রশাসককে একটি চিঠিও দেন মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুনুর রশিদ।  

ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘চাঁদপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীতে ড্রেজারের মাধ্যমে গত কয়েক বছর ধরে অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এই নদী থেকে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান ডুবোচর খননের নামে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে এই কাজটি করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন। ফলে ইলিশের বৃহত্তম বিচরণ ক্ষেত্র ও অভয়াশ্রম (ষাটনল থেকে চর আলেকজান্ডার) নষ্টসহ জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে, মেঘনা নদীতে অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনের ফলে প্রধান প্রজনন মৌসুমে চাঁদপুর অংশে ইলিশের প্রজনন ও বিচরণ সম্প্রতি মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।’

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে শত শত ড্রেজারের আঘাতে, নির্গত পোড়া মবিল ও তেলের কারণে মাছের প্রধান প্রাকৃতিক খাদ্য নদীর প্লাংটন আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। এছাড়া বালু উত্তোলনে নদী দূষণসহ নদীগর্ভের গঠন প্রক্রিয়া বদলে যাওয়ার ফলে বাসস্থানের বাস্তুতন্ত্রও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের এই ধরনের পরিবর্তনের ফলে তাদের আবাসস্থল যেমন ধ্বংস হচ্ছে, তেমনি ইলিশসহ অন্যান্য মাছের খাদ্যের উৎস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাছের বিচরণ ও প্রজনন বদলে যাওয়াসহ ইলিশের উৎপাদন মেঘনা নদীতে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ইলিশ রক্ষা এবং আবাসস্থল নিরাপদ করতে প্রধান প্রজনন ও বিচরণ মৌসুমে মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধসহ ড্রেজারগুলো স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দরকার।’

/এএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
উপজেলা নির্বাচনে পলকের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট
সর্বশেষ খবর
অডিও ফাঁস, নারীর কাছে ডিবি পুলিশ সদস্যের ‘হেরোইন বিক্রি’
অডিও ফাঁস, নারীর কাছে ডিবি পুলিশ সদস্যের ‘হেরোইন বিক্রি’
উপজেলা নির্বাচনে নেই বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল
উপজেলা নির্বাচনে নেই বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল
মিরপুরে ‘হারল্যান স্টোর’-এর উদ্বোধন করেন নুসরাত ফারিয়া, পণ্য কিনে হতে পারেন লাখপতি
মিরপুরে ‘হারল্যান স্টোর’-এর উদ্বোধন করেন নুসরাত ফারিয়া, পণ্য কিনে হতে পারেন লাখপতি
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা