চার মাস আগে সৌদি আরব গিয়েছিলেন চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার সজিব চন্দ্র দাস (২২)। সেখানে কাজও শুরু করেছিলেন। কিন্তু গত ১৩ মার্চ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান সজিব। লাশ এখনও সৌদিতেই আছে। টাকার অভাবে দেশে আনতে পারছে না বলে জানিয়েছে পরিবার।
সজিব চন্দ্রের বাড়ি উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের উপাদী গ্রামে। তারা বাবা যুগল চন্দ্র দাস উপাদী এলাকার শান্তিনগর বাজারে ধোপার কাজ করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সজিব চন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে বেকার ছিলেন। গত ডিসেম্বর স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সৌদি আরবে যান। সেখানে কয়েক মাস কাজ করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৩ মার্চ সেখানকার ভাড়া করা বাসায় সজিবের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে ঋণের বোঝায় সজিবের পরিবার হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
যুগল চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার তিন ছেলে এক মেয়ে। ছোট ছেলেকে অনেক আগেই সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলাম। বড় আশা নিয়ে ভাতিজা হৃদয় দাসের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা এনজিও ঋণ নিয়ে আমার ছেলেকে বিদেশে পাঠাই। কিন্তু চার মাস যেতে না যেতেই আমার ছেলে স্টোক করে মারা গেলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে লাশ আনতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে আমার ভাতিজা ও ছোট ছেলে। আমি কোথা থেকে এত টাকা সংগ্রহ করবো? তিন সপ্তাহের বেশি হয়ে হয়ে গেলো, কিন্তু টাকার অভাবে ছেলের লাশ আনতে পারছি না। এদিকে এনজিও সংস্থাগুলো টাকার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে।’
যুগল চন্দ্র বলেন, ‘ছেলের লাশটা পাইলেও কিছু সান্ত্বনা পাইতাম। বিদেশ থেকে ছেলের লাশটারে আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাই।’
উপাদী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদ উল্লাহ প্রধান বলেন, বিদেশ থেকে ওই তরুণের লাশ আনতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু টাকার অভাবে পরিবারের লোকজন তরুণের লাশ আনতে পারছে না। ওই পরিবারকে সহায়তার চেষ্টা করা হবে।