লক্ষ্মীপুর সদরে উত্তর হামছাদি ইউনিয়ন পরিষদের শৌচাগারে এক দম্পতিকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অপমান সহ্য করতে পেরে শৌচাগারে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা করেন মো. আমজাদ হোসেন। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রীর চিৎকারে অন্যরা এসে দরজা খুলে তাদের উদ্ধার করেন।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকাল পৌঁনে ৩টার দিকে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর আগে, দুপুর ২টার দিকে উত্তর হামছাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নির্দেশে গ্রাম পুলিশ সদস্যরা ওই স্বামী-স্ত্রীকে আটকে রাখে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমজাদের মা আয়েশা খাতুন ও মেয়ে লিপি আক্তার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের কাছে তাদের (স্বামী-স্ত্রীর) বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান তাদের দুই জনকে পরিষদে তলব করেন। বেলা ১১টার দিকে ওই দম্পতি পরিষদ কার্যালয় পৌঁছান। চেয়ারম্যান ২টার পর পরিষদে এসে কারও কথা না শুনে তাদের শৌচাগারে আটকে রাখতে গ্রাম পুলিশদের নির্দেশ দেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমজাদ বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে দাদি-নাতনি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। চেয়ারম্যান তাদের কথা শুনেছে। কিন্তু আমাদের কোনও কথা না শুনে শৌচাগারে বন্দি করেন। এ লজ্জা কোথায় রাখবো? নিজেকে শেষ করে দেবো। ১১ বছর বিদেশ করলাম। সব টাকা মায়ের অ্যাকাউন্টে পাঠালাম, আজ তার ফল ভোগ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, স্বামী-স্ত্রীকে শৌচাগারে আটকিয়ে রাখা হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে দাদি-নাতনি নির্যাতনের অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনা সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তাদের পুলিশ দেবো বলেছি। এ ঘটনা শুনে আমজাদ অভিনয় করে জ্ঞান হারায়।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ.কে.আজাদ বলেন, আমজাদ নামে এক ব্যক্তিকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল আনা হয়।
সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিনুল হক বলেন, এ বিষয় কেউ পুলিশে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন বলেন, স্বামী-স্ত্রীকে শৌচাগারে আটকে রাখার ঘটনাটি দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।