কুমিল্লার ধর্মসাগরপাড়ের নগর উদ্যানের পাশে কিশোর রবিউল হাসান শাহাদাতকে (১৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গত শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকালে কাস্টমস অফিস ও আওয়ার লেডি অব ফাতেমা গার্লস হাই স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হত্যায় জড়িতরা কিশোর এবং শাহাদাতের পূর্ব পরিচিত বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জনকে আটকের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার (২০ আগস্ট) রাত ১০টায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৬-৭ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা করেছেন শাহাদাতের মা শাহানার বেগম।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নিহতের স্বজনরা জানান, সাত দিন আগে (১২ আগস্ট) কিশোর গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্য এই ধর্মসাগরপাড়ের একটি রেস্তোরাঁয় যায়। খাবার খেয়ে চলে যাওয়ার সময় বিল চাওয়ায় রেস্তোরাঁর মালিককে মারধর করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। এই ঘটনার পর একজনকে আটক করে পুলিশে দেন রেস্তোরার মালিক। কিন্তু অজানা কারণে তাকে পুলিশও ধরে রাখতে পারেনি। এ ঘটনার সাত দিনের মাথায় শুক্রবার (১৯ আগস্ট) শাহাদাতকে প্রকাশ্যে হত্যা করে ১৫-২০ জনের এক কিশোর গ্যাং।
আরও পড়ুন: সবার সামনে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা
কুমিল্লা সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাত দিন আগে যেহেতু কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা রেস্তোরাঁয় হামলা করে, সেহেতু পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের শক্ত অবস্থানে থাকতে হতো। তাহলে হত্যাকাণ্ডের সাহস কেউ পেতো না। যদিও দুটি গ্রুপ ভিন্ন হতে পারে, তবে উভয়ই কিশোর গ্যাং। অথচ ওই ঘটনায় নাকি জিডিও হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে কী করে হবে!’
এ বিষয়ে রেস্তোরাঁর মালিক শাহিদুজ্জামান রাশেদ বলেন, ‘গত শুক্রবারে আমার রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনা ঘটে। পরে থানায় গিয়ে মামলার প্রস্তুতিও নেই। কিন্তু বিষয়টি নিজেদের মাঝে মীমাংসা হয়ে গেছে, তাই আর মামলা করিনি।’
কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। ধর্মসাগরপাড়ের রেস্তোরাঁর ঘটনায় তাদের মধ্যে মীমাংসা হয়ে যাওয়ায় আর অভিযোগ আসেনি।’
হত্যার শিকার শাহাদাতের বাবা বলেন, ‘একটা ঘটনার সঙ্গে আরেকটা ঘটনা জড়িত। তখন সতর্ক হলে আর আমার ছেলেকে হয়তো হারাতে হতো না। রেস্তোরাঁ ভাঙচুর করা কিশোরদের শাসন করা হলে, এক সপ্তাহ পর অন্য কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা শাহাদাতকে হত্যার সাহস পেতো না।’
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ওই এলাকাটায় নজর রাখছি। ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছি। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’