শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এখনও প্রস্তুত হয়নি চট্টগ্রাম শহরের শহীদ মিনার। এক বছরের বেশি সময় ধরে পুরাতন শহীদ মিনার ভেঙে একই নকশায় পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনও শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এ বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে এ শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো যাবে না। তবে আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের আগেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি প্রস্তুত থাকবে।
এদিকে, নতুন শহীদ মিনার না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) পরিচালিত মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল ও কলেজ মাঠে নির্মিত শহীদ মিনারে বিভিন্ন দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
১৯৬২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন কে সি দে সড়ক এলাকায় শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। শহীদ মিনারটির তত্ত্বাবধানে রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের আওতায় একই নকশায় পুননির্মাণের লক্ষ্যে শহীদ মিনারটি ভাঙা হয়। বর্তমানে এটির পুনর্নির্মাণের কাজ চলমান।
চট্টগ্রামে স্মৃতিসৌধ না থাকায় একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চসহ জাতীয় দিবসগুলোতে শহীদ মিনারেই কর্মসূচি পালন করা হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম শহীদ মিনারে বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ভাঙার কাজ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ মিনার নির্মাণকাজকে ঘিরে শ্রমিকদের ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। কেউ ব্যস্ত টাইলস বসানোর কাজে, কেউ আস্তরের কাজে। শ্রমিকরা শহীদ মিনার এবং আশপাশের কাজ করছেন।
নির্মাণকাজে নিয়োজিতরা বলছেন, শেষ মূহূর্তের কাজ চলছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে নয়, ২৬ মার্চের আগে প্রস্তুত হবে শহীদ মিনার। চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীদের দাবির মুখে একই প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট হল। পুরনো ভবন ভেঙে ১৫ তলা বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণকাজ করছে সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
২৩২ কোটি ৮৯ লাখ ৩০ হাজার টাকার প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। প্রকল্পের অধীনে মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ও পাবলিক লাইব্রেরির অংশের পুরনো স্থাপনা ভেঙে ১৫ তলা গণগ্রন্থাগার ও আট তলা অডিটরিয়াম ভবন নির্মাণ চলছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার ও মুসলিম ইনস্টিটিউট হলের কাজ পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। পরিদর্শনকালে মেয়র নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
প্রকল্প কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার কোথায় হবে তা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। গত বছরের জানুয়ারিতে পুরাতন শহীদ মিনার ভাঙার কাজ শুরু হয়। ৫ থেকে ৬ মাস ধরে নতুন শহীদ মিনার নির্মাণে কাজ চলছে। এখন শহীদ মিনারের কাজ শেষ পর্যায়ে। তবে একুশে ফেব্রুয়ারিতে এখানে শ্রদ্ধা জানানো যাবে না। ২৬ মার্চের আগে আমরা শহীদ মিনারটি প্রস্তুত করতে পারবো।’