দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নতুনরা। এরমধ্যে তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকি দুটি ছিল ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থীদের। সে দুটিতেও এবার প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দল মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। রাজধানী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন তিনি।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের যে তিনটিতে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে সেগুলো হলো—চট্টগ্রাম-১ আসনে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির স্থলে তার ছেলে মাহবুব রহমান রুহেল, চট্টগ্রাম-৪ আসনে দিদারুল আলম এমপির পরিবর্তে সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন ও চট্টগ্রাম-১২ আসনে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপির পরিবর্তে পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। সামশুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসন থেকে টানা তৃতীয়বার সংসদ সদস্য হয়েছেন। তার আসনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড-নগরের একাংশ) আসন থেকে দিদারুল আলম দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কাশেমের ছেলে এস এম আল মামুন।
মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এবং এস এম আল মামুন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের আগে দুই জনই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের ১৪ প্রার্থী। বাকি দুটি আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এদিকে, আগামী নির্বাচন জোটবদ্ধ নাকি দলীয়ভাবে করবে, তা এখনো চূড়ান্ত করেনি আওয়ামী লীগ। গতবারের মতো চট্টগ্রাম-২ ও চট্টগ্রাম-৫ আসনে এবারও দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার এবং চট্টগ্রাম-৫ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম। গতবার এই দুটি আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হলেও জোট ও বিরোধী দলের প্রার্থীর (জাতীয় পার্টি) কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
চট্টগ্রামের অন্যান্য আসনের মধ্যে মনোনয়ন পাওয়া আগের সংসদ সদস্যরা হলেন চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে নজরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।
চট্টগ্রাম-৫ আসনে মনোনয়ন পাওয়া এম এ সালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দীর্ঘ অনেক বছর পর হাটহাজারীবাসী আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী পেয়েছেন। আসনটি আগে জোটের শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হতো। আমাকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর দলমত নির্বিশেষে হাটহাজারীর মানুষ আনন্দ মিছিল করেছেন। আমাকে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করায় নেত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।’