নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের বাকিপুর গ্রামের অটোরিকশা চালক মামুনুর রশিদকে (২০) হত্যার ঘটনায় তার বন্ধু সোহাগকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত মামুনুর ও গ্রেফতার সোহাগ দুই জন পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক ছিলেন। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিয়েছেন আসামি সোহাগ।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকালে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে মামুন হত্যার ঘটনায় আসামি সোহাগকে গ্রেফতারের বিষয়ে ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন।
তিনি জানান, অটোরিকশা চালানোর সুবাদে গত এক বছর আগে মামুনুরের সঙ্গে পরিচয় হয় অটোরিকশা চালক সোহাগের। এরপর থেকে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তারা দুই জন বিভিন্ন সময় একসঙ্গে গাঁজা সেবন করতো। গত ২২ জানুয়ারি সোহাগ মোবাইলে মামুনকে জানায় রাতে তারা একসঙ্গে গাঁজা সেবন করবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাধবসিংহ গ্রামের গাজী আলা উদ্দিনের বাড়ির পশ্চিম পাশের সুপারি বাগানে সিগারেট নিয়ে আসে সোহাগ। পরে দুই জন মিলে গাঁজা সেবন করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন, গাঁজা সেবন করার একপর্যায়ে সিগারেট নিয়ে দুই জনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাতাহাতির একপর্যায়ে সোহাগকে পা থেকে স্যান্ডেল খুলে ছুড়ে মারে মামুন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে একটি ইটের ভাঙা অংশ দিয়ে মামুনের মাথায় আঘাত করে এবং অণ্ডকোষে লাথি মারে। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ইটের টুকরাটি পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে পালিয়ে যায় সোহাগ। গত ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাগান থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা কবির হোসেন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় পুলিশ গত ২৭ জানুয়ারি রাতে প্রথমে সুবর্ণচরে অভিযান চালিয়ে নিহত মামুনের বন্ধু সোহাগকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে মামুনের ব্যবহৃত জুতা, একটি মানিব্যাগ, ইটের টুকরা ও এক পুরিয়া গাঁজা উদ্ধার করে।
এদিকে রবিবার দুপুরে মামুন হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজগঞ্জ-ছয়ানী সড়কে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এ সময় একটি বিক্ষোভ মিছিলও করেন স্থানীয় লোকজন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- রাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর চৌধুরী সেলিম, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরিদসহ নিহতের পরিবারের স্বজন ও এলাকাবাসী। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে এ হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত সময়ে হত্যাকারী সোহাগসহ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।