কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বেপরোয়া ট্রাকচাপায় এক মাদরাসাছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় গাড়ির চালক পলাতক থাকলেও গ্রামজুড়ে শোকের আবহ নেমে এসেছে। সোমবার (১১ মার্চ) বেলা ১২টায় উপজেলার জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের গোহারুয়া ব্যাপারী বাড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু রবিন ভুঁইয়া (১১) গোহারুয়া গ্রামের জামাল ভুঁইয়ার ছেলে। রবিন মানিকমুড়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে রবিন মাদ্রাসা থেকে এসে তার বাবার কাছে যাচ্ছিল। তার বাবা স্থানীয় মান্দ্রা বাজারের একটি বেসরকারি ব্যাংকের উপশাখার সিকিউরিটি গার্ড। এ সময় গোহারুয়া ব্যাপারী বাড়ির সামনে আসলে বেপরোয়া গতির বালুবাহী একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়। এতে ট্রাকের চাকার নিচে পড়ে যায় তার মাথা। এ সময় ওই শিশুর মাথার খুলি ফেটে মগজ সড়কে ছিটকে পড়ে। ট্রাকের চাকাতে লেগে যায় মগজ ও রক্ত। মাথা থেকে চোখ বেরিয়ে যায়। ১০ হাত দূরে গিয়ে পড়ে মাথার খুলির অংশ। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, ‘মানিকমুড়া-মান্দ্রা সড়কটি এক লেনের। কিন্তু আশপাশের কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে পাশের ইটভাটাগুলোতে নেওয়া হয়। বালু উত্তোলন করেও এই সড়ক ব্যবহার করা হয়। বেশি মাটি ও বালু পরিবহনের জন্য চালকেরা বেপরোয়াভাবে এই সড়কে ট্রাক চালায়। এতে করে দুর্ঘটনাও ঘটে। কিন্তু সব দুর্ঘটনা মানুষ শুনে না। প্রভাবশালী মহল টাকা দিয়ে দফারফা করে ফেলে।’
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ ঘটনায় অজ্ঞাত চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে শিশুর পরিবার। পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করেছি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসমাইল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটির বিষয়ে শুনেছি। ওই এলাকা থেকে আগে তেমন কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে আমরা অভিযোগের অপেক্ষায় থাকি না। সারা উপজেলায় অভিযান করি। অবৈধভাবে মাটি কেটে বেপরোয়া গতির বাহনের বিরুদ্ধে আমরা শিগগিরই অভিযান করবো।’