বান্দরবানের লামা থেকে অপহৃত ২৬ জন রাবার শ্রমিকের মধ্যে দুই দিন পর এক শ্রমিক ফিরে আসার খবর পাওয়া গেছে। তার নাম জিয়াউর রহমান (৪৫), তিনি রশিদ মিয়ার ছেলে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করেন পালিয়ে আসা শ্রমিক জিয়াউর রহমান নিজেই। বর্তমানে তিনি সেনা ক্যাম্পে রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন। তিনি বলেন, ‘রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বারবার অবস্থান পরিবর্তন করছিল সন্ত্রাসীরা। এ সময় তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে জিয়াউর রহমান পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।’
জিয়াউরের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা সংখ্যায় ১২ থেকে ১৪ জন ছিল। তাদের সকলের হাতে অস্ত্র এবং গায়ে পাতা রঙের সেনাসদস্যদের মতো পোশাক রয়েছে। তবে এই সন্ত্রাসীরা কোন সংগঠনের সদস্য তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জায়গাটি লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা। এ ঘটনার পর অপহৃতদের উদ্ধারে সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান জোরদার করেছে।’
এদিকে আরাফাত রাবার প্লান্টেশনের মালিক মো. ফোরকান ও শাহাজাহান মেম্বার বলেন, ‘অপহৃত শ্রমিকদের মুক্তিপণ নিয়ে দর কষাকষি চলছে। সন্ত্রাসীরা একেকবার একেক নম্বর থেকে কল দিচ্ছে।’ চাঁদার দাবিতে এসব শ্রমিকদের অপহরণ করা হয়েছে বলেও জানান তারা।
জানা যায়, শনিবার (১৫ জানুয়ারি) গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে ২৬ জন শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তারা হলেন- মো. ফারুক (২৬), মো. আইয়ুব আলী (২৬), মো. সিদ্দিক (৪০), মো. আব্দুল খালেক (২০), আব্দুল মাজেদ (১৭), মনিরুল ইসলাম (৩০), জিয়াউর রহমান (৪৫), মো. মোবারক (২৫), মো. হারুন (৩০), রমিজ উদ্দিন (৩০), সৈয়দ নুর (২৮), মো. কায়ছার (৩৮), মো. মনির হোসেন (৩৫), মো. ইমরান (১৭), মঞ্জুর (৩০), আফসার আলী (২৫), মো. খাইরুল আমিন (৩০), মো. আবু বক্কর (২৯), মো. আ. রাজ্জাক (৩৩) ও মবিন (২৫)। এ ছাড়া বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।
অপহরণের খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। অপহৃতদের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে বলে জানান বাগানের মালিকরা। পুলিশ ২২ জন শ্রমিক অপহরণের কথা জানালেও স্থানীয়দের মতে সর্বমোট ২৬ জন শ্রমিক অপহরণের শিকার হয়েছেন। এদিকে, প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০ হাজার করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি একই উপজেলার সরই ইউনিয়নের লিংপুং এলাকা থেকে ৭ শ্রমিককে অপহরণ করেছিল সন্ত্রাসীরা। পরে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।