চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় ইফতার মাহফিল আয়োজনকে ঘিরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে একজনের মাথায় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল ও একটি অটোরিকশায় আগুন দেওয়া হয়।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত উপজেলার নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের অদুদ চৌধুরী ঈদগাহ মাঠ, ইউসুফ দিঘি পাড় ও গহিরা চৌমুহনী এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।
সংঘর্ষে আবদুল কাইয়ুম (২৮) নামে এক ব্যক্তির মাথায় গুলি লাগে। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এ ছাড়া সংঘর্ষে আহত হন গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী মুহাম্মদ সেকান্দর (২৮) ও তার ব্যক্তিগত সহকারী অর্জুন কুমার নাথ (৪৭)। এছাড়াও সংঘর্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত মুহাম্মদ মোরশেদ আলম (৪০), মুহাম্মদ বাদশাসহ আরও ১০/১২ জন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের নোয়াজিশপুর গ্রামের অদুদ চৌধুরী ঈদগাঁ মাঠে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীরা। বিকেল পাঁচটার দিকে মাহফিল শুরু হলে মোটরসাইকেলে ২০ থেকে ২২ জন লোক এসে মাহফিলে থাকা সবাইকে চলে যেতে বলেন। সেখানে ইফতার মাহফিল হবে না বলে জানান। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ান। একপর্যায়ে গোলাগুলি শুরু হয়। একজন গুলিবিদ্ধ হন। সন্ধ্যার পর আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের ইউসুফের দিঘি এলাকায় পাঁচটি মোটরসাইকেল ও একটি অটোরিকশায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত রাউজান উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ইফতার মাহফিল চলার সময় হঠাৎ ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেলে ২০ থেকে ২২ জন লোক এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর লোকজন এ হামলা চালিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির সদস্য আবু জাফর চৌধুরী বলেন, ‘নোয়াজিশপুরের পাশের ইউনিয়নের পাশে চিকদাইতে আমাদের দলীয় ইফতার মাহফিল ছিল। সেখানে যাওয়ার পথে গোলাম আকবরের অনুসারীরা আমাদের কর্মীদের অতর্কিত হামলা করে মারধর করেন। এ সময় আমাদের কর্মীদের পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তারা। এ ছাড়া সন্ধ্যায় আমাদের কর্মীদের ওপর আবারও হামলা করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।'
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূইঁয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'রাউজানে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ বাধে বলে জানতে পেরেছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে আহত কাউকে পায়নি। ৩-৪ জন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। এখন পর্যন্ত কোনও পক্ষ অভিযোগ দেয়নি৷ ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার আলামত পেয়েছে।