মাদারীপুর রাস্তি ইউনিয়নে পাঁচখোলা থেকে ডিএসপি স্কুল পর্যন্ত সড়কে সরকারি নিয়ম অমান্য করে পাকাকরণের কাজ চলছে। এই রাস্তা আশেপাশের বাড়ি-ঘর থেকে অস্বাভাবিকভাবে ৩ ফুট নিচু করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে এ কাজের প্রতিবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)-এর পক্ষ থেকে সড়কটির কাজ শুরুর পর সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও জেলা অফিসে অভিযোগ দিয়েও কোন ধরনের প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
এলাকাবাসী অভিযোগ, মাদারীপুর শহর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে রাস্তি ইউনিয়নের পাঁচখোলা থেকে ডিএসপি স্কুল পর্যন্ত এই কাঁচা সড়কটি সরকারিভাবে পাকাকরণের কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীর খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু নির্মাণাধীন এ সড়কটি মাটির তৈরি রাস্তা কেটে গর্ত করে পুরনো রাস্তার চেয়ে দুই থেকে তিন ফুটেরও বেশি নিচু করে পাকাকরণের কাজ শুরু করে ঠিকাদার। এ রাস্তার দু’পাশ ঘেঁষে গ্রামবাসীর বাড়ি রয়েছে। এসব বাড়ির থেকে বর্ষার দিনে পানি নেমে রাস্তার ওপর জমা হয়ে সড়ক নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া বর্ষায় পানি জমে ভোগান্তির শিকার হবে এলাকাবাসী। পাকা সড়কটি এলাকার জনগণের উপকারের পরিবর্তে সমস্যা সৃষ্টি করবে বলে দাবী এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাটির তৈরি রাস্তা কেটে গর্ত করে পুরনো রাস্তার চেয়ে দুই থেকে তিন ফুটেরও বেশি নিচু করা হয়েছে। দেড় কিলোমিটারের অর্ধেকেরও বেশি জায়গায় ইটের খোয়া বিছানো হয়েছে। দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে এই দেড় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে অত্যন্ত নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে। দেড় কিলোমিটার সড়কে নির্ধারিত স্তরে ৩ ফুটেরও বেশি উঁচু করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য খরচ হতো প্রায় ২০ লাখ টাকা। এই কাজ না করে প্রতিষ্ঠানটি এই অর্থ সাশ্রয় করার জন্য এ কাজ করছে।
কর্তৃপক্ষের দাবি, সড়কটি নিচু করে তৈরির কাজ করছিল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তাদের নির্ধারিত উচ্চতায় সড়কটি নির্মাণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে একইভাবে এই কাজ সম্পন্ন করছেন তারা।
স্থানীয় শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘দুপাশে উঁচু এবং মাঝখানে নিচু অবস্থায় কোনও পাকাসড়কের কাজ দেশের কোথাও হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। আমার ধারণা প্রতিটি রাস্তা পাকাকরণের ক্ষেত্রে ফ্লাড লেভেল বা বন্যাস্তর থাকে। এখানে কাজের ক্ষেত্রে এই স্তর মানা হচ্ছে না। কোনোরকমভাবে জোড়াতালি দিয়ে কাজ শেষ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।’
সাইদুর রহমান আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও তারা কোনও ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তারা বলছেন ঠিকাদারকে চাপ দিচ্ছেন, কিন্তু বাস্তবে এর কোনও প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে নিচু করে নির্মাণ কাজ চলছে।’
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সরেজমিনে এ রাস্তা পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখেছি যে, সড়কটি বন্যার স্তর এবং নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে অনেক নিচু করে তৈরি করছে ঠিকাদার। তাই তাদের নিয়ম অনুযায়ী কাজের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’