১০ বছর আগে ইসলামী ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখায় এক কোটি টাকা সঞ্চয় রেখেছিলেন লুৎফর রহমান নামের এক গ্রাহক। টাকা রাখার তিন বছর পর তিনি মারা যান। ওই হিসাব নম্বরে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত লাভসহ এক কোটি ৭৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা জমা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে এই টাকা উত্তোলনের জন্য বারবার ব্যাংকে যাওয়া হলেও তোলা সম্ভব হয়নি।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে টাকা উত্তোলনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন মৃত লুৎফরের স্ত্রী মোছা. সুলতানা। সংবাদ সম্মেলনের খবর পেয়ে দ্রুত টাকা ফেরত দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুলতানার ছেলে ফাহাদ রহমান। তারা শহরের সাবালিয়া এলাকার বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা জানান, ২০১৩ সালের ১৯ আগস্ট তার স্বামী লুৎফর রহমান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখায় এক কোটি টাকার সঞ্চয় রাখেন। সঞ্চয়ে তাকে নমিনি করেন। ২০১৬ সালের ১১ জুন লুৎফর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকে যান। ব্যাংক থেকে জানানো হয়, টাকার জন্য লুৎফর রহমানের বাবা মোসলেম উদ্দিন সাকসেশন সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা করেছেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে টাকা দেওয়া যাবে না।
তিনি জানান, মামলাটি আদালত ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৩ ধারা অনুসারে নমিনি হিসাবে সমস্ত টাকা উত্তোলনের একমাত্র অধিকারী মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ ক্ষেত্রে প্রার্থীপক্ষ আইনগত প্রতিকার প্রাপ্তি অধিকারী নন মর্মে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয়। পরে গত ৩১ জুলাই মামলাটি খারিজ করা হয়। ৬ আগস্ট পুনরায় টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে গেলে শাখা ব্যবস্থাপক বিভিন্ন আইন দেখিয়ে দেননি।
সুলতানা বেগম জানান, শাখা ব্যবস্থাপক তাদের নানাভাবে হয়রানি করছে। এতে তারা মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ছেলে ফাহাদ রহমান বলেন, সংবাদ সম্মেলনের পর ব্যাংক থেকে ডেকে নিয়ে টাকাগুলো আমাদের অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দিয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখার প্রধান ভাইস প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ মাছউদ হাকিম খান জানান, এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা যাবে না। তবে বিকালে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।