নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ফুটবল টুর্নামেন্টের ব্যানারে নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও বাড়িঘর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের আট জন আহত হয়েছেন।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের শ্রীনিবাসদী এলাকায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুম শিকারি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আমির হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে টেঁটা, রামদাসহ দেশি অস্ত্র ব্যবহার করেছে উভয় পক্ষ।
আহতরা হলেন আমির হোসেনের ভাতিজা সাব্বির হোসেন, হাবিবুর রহমান, কাউসার আহমেদ, মো. জামাল এবং মাসুমের অনুসারী বিএনপি নেতা মো. দেলোয়ার, মো. মাসুদ, রুবেল ও মো. সামাদ। এর মধ্যে সাব্বির, দেলোয়ার ও মাসুদকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মাসুমসহ তার অন্তত চার জন সমর্থকের বাড়িঘর লুটপাট চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। স্থানীয় রাজনীতিতে মাসুম ও আমির হোসেন উভয়ে বিএনপির ঢাকা বিভাগীর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের অনুসারী।
পুলিশ ও উভয় পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে শ্রীনিবাসদী ফ্রেন্ডস ক্লাবের উদ্যোগে একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ছিল। মাসুমের ভাই মামুন শিকারি ও আমির হোসেনের ভাতিজা রুহুল আমিন আয়োজক কমিটির সদস্য। খেলা উপলক্ষে সকাল থেকে মাঠের এক পাশে অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় নজরুল ইসলাম আজাদকে। অনুষ্ঠানের ব্যানারে আমির হোসেনের নাম ছিল না। এ নিয়ে রুহুল আমিনসহ আমির হোসেনের বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা খেলার মঞ্চ ভাঙচুর করেন। এ সময় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর জেরে উভয় পক্ষের লোকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান।
নিজেকে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি উল্লেখ করে আমির হোসেন বলেন, ‘খেলার আয়োজক পাঁচ জন। কিন্তু বাকিদের সঙ্গে আলাপ না করেই মাসুম শিকারির ভাই এককভাবেই অনুষ্ঠান আয়োজন করে ফেলে। সেখানে তারা নজরুল ইসলাম আজাদকে অতিথি করে। এ নিয়ে তর্কের জেরে মাসুম শিকারির নেতৃত্বে বিকালে দেড় থেকে দুই শতাধিক লোক অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িঘরে হামলা চালায়। আমার লোকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করবো।’
তবে মাসুম শিকারির অভিযোগ, আমির বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি মূলত ব্যবসায়ী। ৫ আগস্টের পর নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব তৈরির চেষ্টা করছেন। ফলে খেলার ব্যানারে স্বাভাবিকভাবেই আমিরের নাম যায়নি। এ নিয়ে তার ভাতিজা রুহুল আমিনসহ লোকজন মঞ্চ ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে তারা প্রথমে আমাদের লোকজনের ওপর অস্ত্রসহ হামলা করেন। পরে আহত ব্যক্তিদের নিয়ে হাসপাতালে চলে এলে অন্তত পাঁচটি বাড়িতে লুটপাট চালান তারা। এ ঘটনায় থানায় মামলা করবো।’
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন বলেন, ‘ফুটবল খেলা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ তার অনুসারীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এখনও কোনও পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’