মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজাকে আটক করে ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা (৫৩) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ললাটি গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। তিনি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে ছিলেন বলে জানা গেছে।
গজারিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজ অভ্যন্তরে অবস্থানকালে ওই শিক্ষককে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গজারিয়া থানার ওসি আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, হোসেন্দী ইউনিয়নে চর বলাকী গ্রামে ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর মামলায় আটক দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষের পদ নিয়ে মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার সঙ্গে স্থানীয় একটি পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজ পরিচালনার জন্য অস্থায়ী এডহক কমিটি ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয়। পরে সেই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন অধ্যক্ষ। শুনানি শেষে আদালত সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। পাশাপাশি অধ্যক্ষ মোনতাজকে বহিষ্কারের পন্থা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার দায়িত্ব পালনে কোনও বাধা না থাকলেও স্থানীয় একটি পক্ষ তাকে কলেজ প্রবেশে বাধা দিচ্ছিলেন বলে জানা যায়।
অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা দাবি করেন, আমি একজন শিক্ষক, আমি কার্যালয় ভাঙচুর করতে যাব কেন। আমি সোনারগাঁও উপজেলার যে এলাকায় বসবাস করি, সেখান থেকে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে অন্য উপজেলায় বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর করতে গিয়েছি- বিষয়টা হাস্যকর। জীবনে কখনও ওই গ্রামে যাইনি। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।
চর বলাকী গ্রামের ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর মামলার বাদী মাহফুজ বলেন, আমি অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজাকে চিনি না। পুলিশের সঙ্গে হয়তো কোনও সমস্যা করেছে সেজন্য পুলিশ তাকে এই মামলায় আটক দেখিয়েছে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর চর বলাকী গ্রামে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। সেখানে বহিরাগত কেউ ছিল না।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এটা জানি।’ মামলার বাদী আসামিকে চেনেন না- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি তা এড়িয়ে যান।