ইরান শিগগিরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে ফেলতে পারে বলে দাবি করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড। মাত্র কয়েকমাস আগে করা নিজের বক্তব্য বেমালুম উড়িয়ে দিয়ে শনিবার (২১ জুন) এ মন্তব্য করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্যাবার্ড বলেছেন, কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা ইরানের রয়েছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে। তাদের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র মেনে নেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে একমত পোষণ করি।
গত মার্চে কংগ্রেসের সামনে জবানবন্দি সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রেক্ষাপট ছাড়া তার কয়েকটি বাক্য ব্যবহার করে অসাধু কিছু সংবাদমাধ্যম ভুলভাল প্রচার করেছে।
সামাজিক মাধ্যমে কংগ্রেসে দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও সংযুক্ত করেছেন গ্যাবার্ড। সেখানে তিনি বলেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না বলে মার্কিন গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন। ২০০৩ সালে পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করার পর অস্ত্র তৈরির পথ তেহরান আর মাড়ায়নি বলে বিশেষজ্ঞরাও একমত হয়েছেন।
তবে ইরানের ইউরেনিয়ামের (পারমাণবিক কার্যক্রমের প্রধান কাঁচামাল) ভাণ্ডার নিয়ে ওই জবানবন্দিতেই নিজের বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন গ্যাবার্ড। তিনি বলেছিলেন, দেশটির কাছে এত পরিমাণ ইউরেনিয়াম এর আগে কখনও ছিল না। পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন একটা দেশের জন্য ইউরেনিয়ামের এই বিশাল ভাণ্ডার খুবই অবাক করার মতো বিষয়।
মার্চে গ্যাবার্ডের জবানবন্দির পর সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তুলসি ভুলভাল বকছেন। আর তুলসির কথার তিনি থোড়াই পরোয়া করেন। ইরানের হাতে ব্যাপক কাঁচামাল থাকা এবং কয়েক মাসের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনার যথেষ্ট তথ্য মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে রয়েছে।
ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সন্নিকটে রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র সেটা মেনে নেবে না।
তবে পশ্চিমাদের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে ইরান দাবি করে আসছে, পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে তাদের কোনও আকাঙ্ক্ষা নেই। তাদের কর্মসূচি পুরোটাই শান্তিপূর্ণ (বেসামরিক) কাজের উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
গত সপ্তাহে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েল। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়, অপারেশন রাইজিং লায়ন। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে বাঁধা দিতেই এই অভিযান চলছে বলে দাবি তেল আবিবের।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সপ্তাহব্যাপী হামলায় অন্তত ৪৩০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বেসরকারি হিসাব মতে, সংখ্যাটি ৬৫০ ছাড়িয়ে গেছে।
ইসরায়েলের অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় প্রথম দিন থেকেই হামলা চালিয়ে আসছে ইরান। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
