সাভারে রানা প্লাজার ১২ বছর উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বালন করে নিহতদের স্মরণ করেছেন তাদের স্বজন ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাভারের রানা প্লাজার সামনে অবস্থিত অস্থায়ী বেদিতে এই মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় নিহতদের স্মরণে কিছু সময় নীরবতা পালন ও সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
পরে নেতাকর্মীরা তাদের বক্তব্যে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- ২৪ এপ্রিলকে জাতীয়ভাবে শ্রমিক শোক দিবস ঘোষণা করা, রানা প্লাজার সামনে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা, রানা প্লাজার জমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত ও আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং হতাহত শ্রমিকদের এক জীবনের আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা।
এ সময় বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, 'প্রতিবছর এই দিনে আমরা নিহতদের স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করি। প্রতিবছরই আমরা একই দাবি তুলে ধরি। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির কোনোটাই বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমরা আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের দাবিগুলো পূরণ করবে। ভবন মালিক সোহেল রানাসহ দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে।’
রানা প্লাজার পাঁচতলায় সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন নিলুফার ইয়াসমিন। ভবন ধসের সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করা হয়। তিনি মেরুদণ্ড, পা ও মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। দীর্ঘদিন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি তিনি।
নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের ঘটনা একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আমরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, চিকিৎসা, ভবন মালিকের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছিলাম। অদ্যাবধি আমাদের একটি দাবিও পূরণ হয়নি। হাসিনা সরকারের পতনের পর আমরা স্বপ্ন দেখছিলাম দাবিগুলো পূরণ হবে। কিন্তু এই সরকারও আমাদের বিষয়ে কোনও আলোচনা করছে না।’