X
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২

ধানের বাম্পার ফলন সত্ত্বেও লোকসানের আশঙ্কা

বাগেরহাট প্রতিনিধি
১৮ মে ২০১৯, ১১:০৮আপডেট : ১৮ মে ২০১৯, ১১:২২

বোরো ক্ষেত বাগেরহাটে এবছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বেশিরভাগ জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষক। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় ফণী আতঙ্কে অনেক কৃষক আগে ভাগেই ধান কেটে ঘরে তুলেছিলেন। তবে ধানের এই মৌসুমে  শ্রমিক সংকট ছিল তীব্র।  প্রায় দেড় মণ ধানের দামে মিলছে একজন শ্রমিক। এদিকে কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে বাম্পার ফলন সত্ত্বেও লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় ৫৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে চিতলমারী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ১১হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে কম হয়েছে মোংলায়, মাত্র ২ হেক্টর জমিতে।

কৃষকরা বলছেন, কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে একদিকে যেমন ধানের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে, সেইসঙ্গে এবছর শ্রমিক সংকটের কারণে মজুরিও বেড়েছে। একারণে ধান উৎপাদন থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচের পরিমাণও অনেক বেশি। সেই তুলনায় ধানের দাম কম। ফলে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও লোকসান হতে পারে তাদের।

বোরো ক্ষেত ফকিরহাটের বেতাগা ইউনিয়নের অর্গানিক বেতাগা এলাকার কৃষক রিপন বলেন, তিনি ৪ বিঘা জমিতে এবছর বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। ধান কাটার জন্য শ্রমিককে দৈনিক মজুরি দিতে হয়েছে ৭০০-৭৫০ টাকা। আর প্রতিমণ ধানের দাম ৫১০-৫৩০ টাকা। তাও আবার কিনতে চায় না ব্যবসায়ীরা। এবার ধান চাষ করে তার অনেক লোকসান হয়েছে।

একই এলাকার কৃষক দিলিপ কুমার দাস বলেন, তিনি এবার মাত্র তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। যত বেশি জমিতে চাষ করা হবে তত বেশি লোকসান হবে।

বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের কৃষক নিমাই কুন্ডু জানান, শ্রমিকের অভাবে বোরো ধান কাটা নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছিলেন। পরে বেশি মজুরিতে শ্রমিক নিতে বাধ্য হয়েছেন। তিন বেলা ভাত খাইয়ে একজন শ্রমিকের মুজরি দিতে হয়েছে ৬৫০-৭০০ টাকা। যা প্রায় দেড় মণ ধানের দামের সমান। তিন বেলা খাওয়ানো ছাড়াও শ্রমিকদের পান-সুপারি ও চা-বিড়িসহ অন্যান্য খরচ দিতে হয়।

ধান কাটার মৌসুমে প্রতিবছরই বাগেরহাটে শ্রমিকের সংকট থাকে। তাই নড়াইল, যশোর, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিক এসে কাজ করেন এখানে। আর এসব শ্রমিক আনা থেকে শুরু করে সব খরচ কৃষকেই বহন করতে হয়।

বোরো ক্ষেত সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ করা হলেও তার কোনও প্রভাব বাগেরহাটের কৃষক পর্যায়ে পড়ে না। কারণ হিসেবে চাষিরা বলছেন, এখানে মধ্যসত্ত্বভোগীরা নানা উপায়ে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করে থাকেন।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা (বাজার কর্মকর্তা) জিএম মহিউদ্দীন বলেন, ফলন বেশি হওয়ায় ধানের দাম কম। তবে সরকার নির্ধারিত মূল্যে যদি কৃষক পর্যায় ধান ক্রয় শুরু করা হয় তাহলে তারা কিছুটা ন্যায্য মূল্য পাবে। ফলে তারা আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আফতাব উদ্দীন জানান, বাগেরহাটে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। একসঙ্গে অনেক জমির ধান পেকে যাওয়ায় শ্রমিকের সংকট সৃষ্টি হয়। ধানের দাম কম হওয়ায় ফলন ভালো হলেও খুশি হতে পারেননি। এরই মধ্যে খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষি বিভাগের কাছে কৃষকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। কৃষকদের কাছ খেকে ধান কেনা হলে তারা ভালো দাম পাবেন।

 

/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ
রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে ঢাবি শিক্ষার্থী নিহত
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে ঢাবি শিক্ষার্থী নিহত
পাকিস্তান সফরের জন্য সরকারের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় বিসিবি
পাকিস্তান সফরের জন্য সরকারের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় বিসিবি
‘মেসেজ দিতে রিকশা ভাঙা হয়েছিল, আয়ের বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে’
‘মেসেজ দিতে রিকশা ভাঙা হয়েছিল, আয়ের বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে’
সর্বাধিক পঠিত
বিমানবন্দরে তিন উপদেষ্টা, জেরার মুখে দায়িত্বরতরা
সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগবিমানবন্দরে তিন উপদেষ্টা, জেরার মুখে দায়িত্বরতরা
হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম: প্রধান বিচারপতি
হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম: প্রধান বিচারপতি
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
জীববৈচিত্র্য বনাম জীবিকা: সেন্টমার্টিনে টানাপড়েন
জীববৈচিত্র্য বনাম জীবিকা: সেন্টমার্টিনে টানাপড়েন