X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

প্রস্তুতি নিন, আগামী নির্বাচন বেশি দূরে নয়: এমপি নাবিল

যশোর প্রতিনিধি
১৯ আগস্ট ২০২২, ২০:৩৬আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২২, ০০:২১

যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনারা প্রস্তুতি নিন। আগামী নির্বাচন বেশি দূরে নয়। আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে, যেন যশোরের ছয়টি আসনেই নৌকাকে জয়যুক্ত করতে পারি। দেশের সব আসনেই নৌকাকে জয়যুক্ত করে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে আবারও দায়িত্ব দিয়ে আমরা দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারবো।’

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) যশোর শহরতলির ধর্মতলা মোড়ে জাতীয় শোক দিবসের উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা, খাবার ও মাদ্রাসা ছাত্রদের মাঝে পবিত্র কোরআন বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী নাবিল বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই দিন এলে আমাদের হৃদয় ভারাক্রান্ত ও রক্তক্ষরণ হয়। আমরা বেদনাবিধুর হই। বঙ্গবন্ধু হলেন সেই ব্যক্তি যিনি জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেছেন বাঙালির অধিকারের জন্য। বাঙালির অধিকারের কথা বলতে গিয়ে ১৪টি বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। গণতন্ত্র, স্বাধীনতাসহ সব আন্দোলনে নেতৃত্বের সম্মুখ সারিতে ছিলেন তিনি।’

তিনি বলেন, ‘বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু আপস করেননি বলেই ৭০-এর নির্বাচনের পর তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ প্রত্যাখ্যান করেন। তারই ডাকে ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়। ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ জীবন ও আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা পাই লাল-সবুজ পতাকা। স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে পুনর্গঠন করছিলেন তখন যারা দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি তারা ও তাদের বিদেশি প্রভুরা মিলে চক্রান্ত শুরু করে। তারা একের পর এক কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। বঙ্গবন্ধু যখন সব কিছু মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিলেন, তখন ৭৫ সালে তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।’

যশোর-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সময় বাংলাদেশকে নব্য পাকিস্তানে পরিণত করা হয়। তখন বঙ্গবন্ধুর নাম বাংলাদেশের রেডিও, টেলিভিশনে নিষিদ্ধ ছিল। ৭ মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। পাকিস্তান যে আমাদের শত্রু ছিল এই কথাও রেডিও টেলিভিশনে বলা হতো না। বলা হতো হানাদার বাহিনী। আমাদের সৌভাগ্য হলো, বিদেশে থাকার কারণে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। শেখ হাসিনা দেশে এসে দলের হাল ধরেন। একের পর এক গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। তারই আমলে আমরা দেখতে পাই একের পর এক সৃজনশীল কর্মসূচি।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন আরেকটি ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০০১ সাল থেকে শুরু হয় বিএনপি-জামায়াত জোটের দুঃশাসন। তখন দেশ সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। তাদের আমলে সিরিজ বোমা হামলা হয়েছিল। ২১ আগস্ট বোমা হামলা চালিয়ে আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মারা হয়েছিল। তখন স্লোগান হতো বাংলা হবে আফগান আমরা হবো তালেবান। তখন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্ন করা হতো, বাংলাদেশ কি পরবর্তী আফগানিস্তান কিনা। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় আসেন। তিনি আসার পর সব ঘুরে দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়।’

কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিকভাবে মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধি দেওয়া হয়েছে। তিনি ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। কয়েক দিন আগেও জাতিসংঘের একজন দূত এসে আমাদের ধন্যবাদ দিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর একের পর এক সাফল্যে  অনেক গোষ্ঠী বর্তমানে ঈর্ষান্বিত হয়ে আছে। বিএনপি-জামায়াত জোট আবার এক হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা আবার বেরিয়ে আসছে। তারা চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশকে কীভাবে অস্থিতিশীল করা যায়। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুল গং আবারও চেষ্টা করছে কীভাবে বাংলাদেশকে নব্য পাকিস্তানে পরিণত করবে। বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে মানুষ খাবার ও সার চাইতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর একক নেতৃত্বে দুই মাস আগে আমাদের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন। আমাদের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে গেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ একমাত্র নিরাপদ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, একযোগে কাজ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের সংসদ সদস্য হিসেবে সাড়ে আট বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের সদর আসন ও যশোর জেলায় অনেক বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আমাদের মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিটি সেন্টার রয়েছে। নদী খননের কাজ চলছে। শেখ হাসিনার কারণেই এসব উন্নয়ন কাজ সম্ভব হয়েছে। আমরা বঙ্গবন্ধুকে না পেলেও আমাদের সৌভাগ্য যে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকে পেয়েছি।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লাইজু জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মেহেদি হাসান মিন্টু, লুৎফুল কবীর বিজু, প্যানেল মেয়র মোকছিমুল বারী অপু, সৈয়দ মেহেদি হাসান, শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, কামাল হোসেন, যুব মহিলা লীগের সভাপতি মঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী প্রমুখ।

/এফআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
পঞ্চগড়ে হাসনাত আবদুল্লাহআ.লীগ চাঁদাবাজি করে ভারতে পালিয়ে গেছে, আপনারা পালানোর পথও পাবেন না
ছাত্রলীগ নেতাকে আটকের খবর শুনে বাবার মৃত্যু
নেত্রকোনায় সাংবাদিক, চাকরিজীবী ও আ.লীগ নেতাসহ ৪৩৬ জনের নামে বিএনপি নেতার মামলা
সর্বশেষ খবর
চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ২
চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ২
১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া সহকর্মীরা
১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া সহকর্মীরা
ফিরে দেখা: ৪ জুলাই ২০২৪
ফিরে দেখা: ৪ জুলাই ২০২৪
গ্রেনাডাতেও ওয়েবস্টার-ক্যারির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ালো অস্ট্রেলিয়া
গ্রেনাডাতেও ওয়েবস্টার-ক্যারির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ালো অস্ট্রেলিয়া
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি