খুলনায় অভিযান চালিয়ে এক নারীসহ জামায়াত-শিবিরের তিন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাশকতার পরিকল্পনা করতে বাসায় গোপন বৈঠকের সময় তাদের গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে সোমবার (২১ আগস্ট) বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রবিবার বিকালে খালিশপুর থানা এলাকার হাজি ফয়েজ উদ্দীন সড়কের বাসা থেকে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলেন—সোনাডাঙ্গা থানার বয়রা ফারুকীয়া মসজিদ রোড এলাকার আনিছা সিদ্দিকা (৪৮), সাতক্ষীরার শ্যামনগর এলাকার রকিবুল ইসলাম (২৪) ও আশাশুনি এলাকার তামিম ইকবাল (১৯)। তবে গ্রেফতার আনিছা সিদ্দিকার যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ছেলে ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালিকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। এর জেরে স্থানীয় যুবলীগ নেতারা তার নানার বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছেন। এ সময় তার মা প্রতিবাদ করলে থানায় নিয়ে পরে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।’
এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, ‘রবিবার বিকালে আমরা খালিশপুর থানা এলাকার হাজি ফয়েজ উদ্দীন সড়কের খুলনা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির সিদ্দিক হেলালের বাড়িতে অভিযান চালাই। নাশকতার পরিকল্পনা করতে ওই বাসায় গোপন বৈঠক করা হচ্ছিল। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আনিছা সিদ্দিকা। সেখান থেকে তাকে এবং আরও দুই জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। আনিছার বাড়ি সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায়, বৈঠক করতে এই বাসায় আসেন।’
ছেলের ফেসবুক পোস্টের জন্য নয়, নাশকতার পরিকল্পনা করতে বাসায় গোপন বৈঠক করায় আনিছাকে গ্রেফতার করা হয়েছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘তার ছেলে ফেসবুকে কখন কী পোস্ট দিয়েছেন, এই সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। তার বাড়িতে হামলার বিষয়েও জানি না। আনিছা মহানগরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা জামায়াতের রুকন এবং মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির সিদ্দিক হেলালের বোন। রকিবুল শিবিরের সদস্য এবং তামিম ৯ নম্বর ওয়ার্ড শিবিরের সভাপতি। দুপুরে তাদের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন এসআই গোলাম মোস্তফা। বিকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
খালিশপুর থানা পুলিশ জানায়, রবিবার বিকালে সিদ্দিক হেলালের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ওই বাসা থেকে জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদির লেখা বিপুল পরিমাণ বই, তিনটি ল্যাপটপ, চারটি মোবাইল, ধর্মীয় উগ্রপন্থি বই, পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও লিফলেটসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।
এদিকে, রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে জামায়াতের আরও তিন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ। একই দিন রাতে খানজাহান আলী থানা জামায়াতের সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদ মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এ জেড এম তৈমুর রহমান।