সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের কাকবসিয়া গ্রামে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় তিন ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। কাটছে নির্ঘুম রাত। কাকবসিয়া গ্রামের খেয়াঘাট সংলগ্ন প্রায় ৩০০ ফুট ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে।
স্থানীয় কাকবসিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল জোয়ারে খোলপেটুয়া নদীর কাকবসিয়া খেয়াঘাট এলাকায় মুহূর্তের মধ্যে ৩০০ ফুট রাস্তা ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায়। এসে দেখি, প্রবল জোয়ারের চাপে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলা, আম্পান, বুলবুলসহ একাধিক দুর্যোগের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত এসব এলাকার নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ। ত্রাণ চাই না, চাই টেকসই বেড়িবাঁধ।
খেয়াঘাটের মাঝি আব্দুল খালেক গাজী ও মফিজুল ইসলাম বলেন, ফজরের নামাজ পড়ে খেয়াঘাটে আসি। রাতের জোয়ারের পানি নামার সঙ্গে সঙ্গেই ফাটল ধরা শুরু হয়। তার কিছুক্ষণ পরই ইটের সলিং ও যাত্রী ছাউনিসহ ঘাটের পাড়ের ৩০০ ফুট জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের কাজ না করলে নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে।
চেউটিয়া গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী রোকন সানা অভিযোগ করে বলেন, একই স্থান থেকে গত তিন বছরে তিনবার ভেঙেছে। যখনই ভাঙে তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে, সে স্থানে মাটি দিয়ে যায় । আগে থেকে কোন কাজ তারা করেন না। ভাঙ্গনের প্রায় দুদিন হলেও এখনো পানি উন্নয়ন উন্নয়ন বোর্ডের লোক বা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেখা যায়নি।
আনুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস জানান, সকালের ভাটা থেকে শুরু করে দুপুরের জোয়ার মাত্র ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কাকবসিয়া খেয়াঘাটের যাত্রী ছাউনি, ১০০ মিটার ইটের সলিংসহ ৩০০ ফুট রাস্তা গেছে নদীর পেটে। খেয়াঘাট সংলগ্ন বেড়িবাঁধের দ্রুত সংস্কার না করলে আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও খাজরা ইউনিয়নের প্রায় ৪০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় আছেন।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা তৎপর না হলে নদী ভাঙনে উপজেলা আনুলিয়া ইউনিয়ন মানচিত্র বদলে যাবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় জানান, খোলপেটুয়া নদীর কাকবসিয়া খেয়াঘাট এলাকায় ভাঙনের কথা শোনা মাত্রই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। দ্রুত এর সমাধান হবে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মোমেন আলী বলেন, ভাঙনের কথা শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙন প্রতিরোধে নকশা তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। দ্রুত এর কাজ শুরু হবে।