অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত আওয়ামীপন্থি দুই অধ্যাপক ও দুই কর্মকর্তার দুর্নীতি তদন্তে ৫ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ১০৪তম সভায় এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসাইন আল মামুনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এ ছাড়া সদস্য করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সায়েন্স রিসার্চ সেন্টারের কাউন্সিলর মেম্বার ও যবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ড সদস্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. মো. আলতাফ হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. মো. ওমর ফারুক ও প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ইঞ্জিনিয়ার ড. মো. আমজাদ হোসেনকে।
১০৪তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বরখাস্ত শিক্ষক-কর্মকর্তারা হলেন- নীল দলের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবির জাহিদ। তার নামে একাধিক দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। নীল দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে অর্থ লোপাট, লিফট ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হওয়ায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অমান্য করে নিজের স্ত্রী ডা. নুসরত জাহানকে ৩৫ বছর ১১ মাস বয়সে বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
২০২২ সালে টেকনিক্যাল অফিসার হেলালুল ইসলামের সনদ জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি যবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক, যশোর জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া সেকশন অফিসার সাইফুর রহমান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক আইন সম্পাদক ও রেজিস্ট্রার দফতরের সেকশন অফিসার)। ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টা মামলায় গত বছরের ১০ নভেম্বর তাকে আটক করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
যবিপ্রবি সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ রয়েছে। সে সব প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার কারণে তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সে সব দুর্নীতির সবিস্তার খুঁজে বের করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।