জামালপুরে জেল সুপারের বাসভবনে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জারিকারক মো. আকরাম হোসেন ও গোপনীয় শাখার পিয়ন রজব আলী। তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। বিষয়টি নিয়ে কারাগারের কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামালপুর ডায়াবেটিকস হাসপাতালের বিপরীত পাশেই জেল সুপারের বাসভবন। একতলা বিশিষ্ট ভবনটি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগেই রয়েছে তিনটি কক্ষ, একটি বাথরুম, একটি রান্নাঘর ও একটি বারান্দা। সেখানে সপরিবারে বসবাস করছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ওই দুই জন কর্মচারী।
এ বিষয়ে জারিকারক মো. আকরাম হোসেন বলেন, ‘আমি আগে কারাগারের ভেতরের কোয়ার্টারে থাকতাম। ওটা ভেঙে দেওয়ার সময় এখানে এসেছি। এখানে তিন-চার বছর ধরে আছি। আমার বাড়ি সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নের চরযথার্থপুর ভাটিপাড়া গ্রামে। আমার অফিস থেকে বাড়ি অনেক দূরে। নদী পার হয়ে আসা লাগে। তাই এখানেই থাকি। আমার মেয়েটা এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। শহরে একটা বাসা ভাড়া নিতে গেলে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা লাগবে। যে টাকা বেতন পাই, সেটা দিয়ে সংসার চলে না। বাসা ভাড়া কীভাবে নেবো? এখানে থাকা নিয়ে কারাগারের কেউ এখনও কিছু বলে নাই। বললে চলে যাবো।’
তবে ওই সময় রজব আলীকে বাসায় পাওয়া যায়নি। বাসায় থাকা তার এক স্বজন বলেন, ‘কারাগারের কোয়ার্টারে ছিলাম ২২ বছর। ওটা ভেঙে ফেলার পর এখানে উঠেছি বছরখানেক হলো। আমাদের কেউ কখনও কিছু বলেনি। বাসা ছাড়তে বললে ছেড়ে দেবো।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা কারাগারের এক কর্মচারী বলেন, ‘ডিসি অফিসের দুই জন কর্মচারী জেল সুপার ও মেডিক্যাল অফিসারের বাসভবন দখল করে আছেন। সেটি তো জেলা কারাগারের সম্পত্তি। সেখানে জেল সুপার ও মেডিক্যাল অফিসাররা না থাকলে আমাদের স্টাফ থাকবে। অন্যরা কেন থাকবে? আমাদের স্টাফরা অনেক কষ্ট করে থাকেন। আমারা চাই, তারা সেখান থেকে চলে যাক। আমাদের স্টাফরা সেখানে থাকুক।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার তাসনীম জাহান বলেন, ‘আমি সম্প্রতি এই পদে দায়িত্ব নিয়েছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’
জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।’