নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় ‘নেপিয়ার ঘাস’ খাওয়ার পর একটি খামারের ষাঁড়, গাভি ও বাছুরসহ ২৭টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের তাহাযিদ অ্যাগ্রো ফার্মে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া খামারটির আরও কয়েকটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এতে আরও মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন খামারি।
বুধবার (১২ জুন) বিকালে খামারের মালিক জাহিরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার খামারে দুই শতাধিক ছোট-বড় গরু আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই ষাঁড়। কোরবানির ঈদে ষাঁড়গুলো বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছিলাম। গরুগুলোকে খাওয়ানোর জন্য খামারের পাশেই নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছি। এসব ঘাস নিয়মিত খাওয়াতাম। শনিবার সন্ধ্যায় একই ঘাস খাওয়ানোর পর গরুগুলো অসুস্থ হতে শুরু করে। রবিবার দুপুর থেকে একের পর এক গরু মারা যেতে থাকে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে একটি ষাঁড় মারা যায়। সব মিলিয়ে আমার খামারের ২৭টি গরু মারা গেছে। এর মধ্যে দুটি দুধের গাভি ও দুটি বাছুর ছাড়া অন্য ২৩টি ষাঁড়। এগুলোর বাজারমূল্য ৬০-৭০ লাখ টাকা। এছাড়া আরও ১০টি গরু অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেছে। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এই ক্ষতি পোষাতে পারবো বলে মনে হয় না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্বধলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এম এম এ আউয়াল তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘টানা কয়েকদিন ধরে নেত্রকোনায় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির সময় কচি ঘাসে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেশি থাকে। ধারণা করছি, নাইট্রেট বিষক্রিয়ায় গরুগুলো মারা যেতে পারে।’
খবর পেয়ে ঘাসের নমুনা ও মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে ডা. এম এম এ আউয়াল আরও বলেন, ‘পরীক্ষার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। খামারির সঙ্গে আমাদের অধিদফতরের মেডিক্যাল টিম সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ খোঁজখবর রাখছে। আপাতত খামারিদের গরুকে শুধু কাঁচা ঘাস দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এছাড়া নেপিয়ার ঘাস কাটার সঙ্গে সঙ্গে গরুকে খেতে দেওয়া উচিত নয়।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে নেপিয়ার ঘাসের নমুনা নিয়ে ঢাকায় পাঠিয়েছি। পরীক্ষার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। খামারটি আমাদের তত্ত্বাবধানে আছে। সেখানে আরও কয়েকটি গরু অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে। চিকিৎসা চলছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।’