জামালপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আনিছুজ্জামানের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তার অপসারণ দাবি করেছেন ৫০ জন সহকারী সরকারি আইন কর্মকর্তা। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মঙ্গলবার বিকালে জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইন কর্মকর্তাবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) অ্যাডভোকেট তৌফিকুল ইসলাম বাদশা লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ ছাড়াও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম নবী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রিশাদ রেজওয়ান বাবু, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম জামালপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দিদারুল ইসলাম দিদারসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, গত ১ মে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আনিছুজ্জামান ও বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কথপোকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অডিওতে শোনা যায় মামলা রেকর্ড করতে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তিনি চাপ প্রয়োগ করছেন। এ সময় পিপি অ্যাডভোকেট মো. আনিছুজ্জামান ওসিকে যে ভাষায় কথা বলেছেন ও আচরণ করেছেন সেজন্য আইনজীবীদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং আমরা সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছি। এছাড়াও অনিয়ম, দুর্নীতি, আওয়ামী লীগের দোসরদের জামিনে সহায়তা, ক্ষমতার অপব্যবহার, আইনজীবী ও অন্যান্য সহকারী সরকারি আইন কর্মকর্তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ করা হয়। তাই আদালতের ৬৩ জন আইন কর্মকর্তার মধ্যে ৫০ জন আইন কর্মকর্তা পিপির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তাকে অপসারণ দাবি করেন এবং তার সঙ্গে কাজ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দিদারুল ইসলাম দিদার বলেন, ‘পিপি অ্যাডভোকেট মো. আনিছুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনায় তিনি আমাদের দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে সংগঠন থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।’ তাকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জিপি, অতিরিক্ত পিপি, এজিপি, এপিপি, আইনজীবীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বকশীগঞ্জ থানার ওসিকে মামলা রেকর্ড করতে চাপ দেন পিপি এবং তাদের কথপোকথনের একটি অডিও গত ১ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।