জঙ্গি সম্পৃক্ততায় জড়িত সন্দেহে মালয়েশিয়া পুলিশের ফেরত পাঠানো জামায়াত কর্মী পেয়ার আহমেদ আকাশকে ফেনী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার ফেনীর দাগনভূঞা থানার এসআই সাইফুল ইসলামের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে মালয়েশিয়া পুলিশ তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। আকাশ আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র সংক্রান্ত একটি মামলারও আসামি ছিলেন। তবে সে মামলা থেকে তখন তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
শুক্রবার মালয়েশিয়া সময় রাত ৯টায় মালিন্দো এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে ফ্লাইটটি। এরপরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মালয়েশিয়ায় আকাশের ব্যবসায়িক সঙ্গী (পার্টনার) মো. ফজলুল আমীন জাভেদ মুঠোফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গত ১৯ আগস্ট মালয়েশিয়ার পুচং এর একটি বাসা থেকে আকাশকে গ্রেফতার করে সেদেশের পুলিশ। এর আগে ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়া পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন তিনি।
আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র থেকে খোয়া যাওয়া একে-৪৭ রাইফেল বিক্রি করার সময় ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ফেনীতে আকাশসহ ৩ জন র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়। পরে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ওই সময় জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ জানান, পুলিশের সার্জেন্ট আলাউদ্দিন ও সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিনের সহায়তায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে তিনি অস্ত্রগুলো বিক্রি করেন।
এরপর এক-এগারের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সময় আকাশ জামিন পেয়ে পালিয়ে মালয়েশিয়া চলে যায়। ইন্টারপোলের হুলিয়া মাথায় নিয়ে সেখানেও তিনি জামায়াতের রাজনীতি যুক্ত হন।
পেয়ার আহমেদ আকাশ ফেনী শহরে জামায়াত পরিচালিত একটি স্কুল থেকে ১৯৯৩ সালে এসএসসি পাস করেন। স্কুলে পড়ার সময়ই বোনের জামাতা ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আবু ইউসুফের হাত ধরে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত হন। পরে অস্ত্র-ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। আকাশ দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আকাশের মামা আব্দুল কাদের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আকাশ নির্দোষ। মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম রহমান পারভেজ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।’
মালয়েশিয়া থেকে এস এম রহমান পারভেজের প্রতিবাদ
এদিকে আকাশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে নিজের নাম দেখে মালয়েশিয়া থেকে বাংলা ট্রিবিউনে সরাসরি ফোনে যোগাযোগ করে ও পরে প্রতিবাদ পত্র পাঠিয়ে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেদেশে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর ডিস্ট্রিবিউটর এস এম রহমান পারভেজ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনের কাছে এ তথ্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আকাশের সঙ্গে তার কোনও ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল না। তাছাড়া তার মামা আব্দুল কাদেরকে তিনি চেনেন না। তিনি মালয়েশিয়ায় থাকেন কিনা তাও জানেন না। ফলে তার সম্পর্কে না জেনেই ও তাকে হেয় করার জন্যেই এসব মন্তব্য করেছেন ওই ব্যক্তি। প্রকৃত পক্ষে মালয়েশিয়ার পুলিশ বাংলাদেশের পুলিশের অনুরোধে প্রেক্ষিতে তদন্ত করেই পেয়ার আহমেদ আকাশকে আটক করে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনায় কোনও বাংলাদেশি জড়িত নন।’
/এআরএল/
আরও পড়ুন: