X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রমেই খারাপ হচ্ছে মুক্তামনির অবস্থা!

মো. আসাদুজ্জামান সরদার, সাতক্ষীরা
২০ মে ২০১৮, ০৮:০০আপডেট : ২০ মে ২০১৮, ১৪:১৭

ভালো নেই মুক্তামনি

রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামনির শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। আগের তুলনায় তার শরীরও ভেঙে পড়েছে। ডান হাতটি ফুলে আছে। দুর্গন্ধসহ হাতের ফোলা অংশ থেকে মাঝে-মধ্যে রক্ত ও সাদা পোকা বের হচ্ছে।

বিছানায় শুয়ে-বসেই বেশিরভাগ সময় কাটছে মুক্তামনির। তবে তাকে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছে তার পরিবার। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে একমাসের জন্য বাড়িতে এসেছিল মুক্তামনি। তারপর ছয় মাস অতিবাহিত হলেও তাকে আর ঢাকা ফেরানো হয়নি।

মুক্তার বাবা মুদি দোকানি ইব্রাহিম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মুক্তামনির অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। হাত আবারও ফুলে গেছে। ওই হাত থেকে মাঝে-মাঝেই অনেক রক্ত বের হয়।

তিনি বলেন, ‘ঢামেক হাসপাতাল থেকে আসার সময় চিকিৎসকরা মুক্তামনির হাতে প্রেসার ব্যান্ডেজ করে দিয়েছিলেন। এতদিন ধরে তার হাতে সেই ব্যান্ডেজই আছে। এটা খুলে পরিষ্কার করার নিয়মও দেখিয়ে দিয়েছেন ডাক্তাররা। দুই-একদিন পর পর ড্রেসিং করছি। তারপরও হাত থেকে অনেক দুর্গন্ধ বের হচ্ছে।’ ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘সপ্তাহখানেক আগে হাতের ফোলা অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্ত বের হয়েছিল। পরে ওই ক্ষতস্থান থেকে বেশ কয়েকটি সাদা পোকা বের হয়ে আসে। কী যে হবে বুঝতে পারছি না। এখন আল্লাই ভরসা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন স্যারের সঙ্গে কথা হচ্ছে মাঝে-মধ্যে। ফোন করে মুক্তামনির সম্পর্কে স্যার সব শুনছেন। কিছুদিন আগে তিনি ছবি তুলে পাঠাতে বলেছিলেন। ছবিতে হাতের অবস্থা দেখে সামন্ত স্যার বলেছেন, আবারও তো হাতের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি এও বলেছেন, ঈদের পর হয়তো ওকে আবারও ঢাকায় নিয়ে যাবেন।

কিন্তু তাকে (মুক্তামনিকে) ঢাকায় নিয়ে আর কোনও লাভ হবে! এমনই বিস্ময় প্রকাশ করলেন মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন।

উল্লেখ্য, গত বছর ‘মুক্তামনির কী অসুখ জানেন না চিকিৎসকরাও!’ শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউনে একটি খবর প্রকাশিত হয়। পরে অন্যান্য সংবাদমাধ্যমেও এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। বিষয়টি নজরে আসার পর অনেকেই মুক্তামনির চিকিৎসার খরচ জোগাতে হাত বাড়ান। পরে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত বছরের ১২ জুলাই রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত মুক্তামনিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। প্রথমে তার রোগটিকে বিরল রোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরে বায়োপসি করে জানা যায়, তার রক্তনালীতে টিউমার হয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেন বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা। সব রিপোর্ট দেখে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা মুক্তামনির চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ঢামেকের চিকিৎসকরাই তার অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। গত বছরের ৫ আগস্ট মুক্তামনির হাতে প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। প্রথমে তার হাতের ফোলা অংশে অস্ত্রোপচার করে তা ফেলে দেন চিকিৎসকরা। পরে দুই পায়ের চামড়া নিয়ে দুই দফায় তার হাতে লাগানো হয়। ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালামের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল মুক্তামনির স্কিন গ্রাফটিং (চামড়া লাগানো) অপারেশনে অংশ নেন। পরে মুক্তামনির হাত আবারও ফুলে যাওয়ায়, ফোলা কমানোর জন্য হাতে প্রেসার ব্যান্ডেজ বেঁধে দেওয়া হয়। এর প্রায় পাঁচ মাস পর গত ২২ ডিসেম্বর বাবা-মার সঙ্গে মুক্তামনি নিজ বাড়িতে ফিরে আসে।



আরও পড়ুন: মুক্তামনির কী অসুখ জানেন না চিকিৎসকরাও!

 

/এপিএইচ/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গুলিস্তানে কমিউনিটি পুলিশ সদস্যের মৃত্যু, সন্দেহ ‘হিট স্ট্রোক’  
গুলিস্তানে কমিউনিটি পুলিশ সদস্যের মৃত্যু, সন্দেহ ‘হিট স্ট্রোক’  
গরমে অসুস্থ হয়ে প্রার্থীর মৃত্যু, নিবার্চন স্থগিত
গোপালপুর উপজেলা পরিষদগরমে অসুস্থ হয়ে প্রার্থীর মৃত্যু, নিবার্চন স্থগিত
প্রেক্ষাগৃহ থেকে না নামতেই উঠলো পাঠ্যসূচিতে!
প্রেক্ষাগৃহ থেকে না নামতেই উঠলো পাঠ্যসূচিতে!
কোরবানির জন্য পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই সরকারের
কোরবানির জন্য পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই সরকারের
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে