বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মোংলা সমুদ্র বন্দরে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভা করে জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এদিকে মোংলা বন্দরে তিনটি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে কর্তৃপক্ষ।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে এই সভায় পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে জেলা প্রশাসক জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলায় ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা সদরসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০টি মেডিক্যাল টিম। রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কয়েক শত স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দীন জানান, ‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় সর্বত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে তিনটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বন্দর জেটি ও আউটার অ্যাংকরেজে অবস্থানরত ১৪টি জাহাজ নিরাপদে রয়েছে। ঘর্ণিঝড়ের সংকেত ৫ নম্বরে উঠলেই বন্দরের পণ্যবোঝাই ও খালাসের বিষয়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আগামীকাল শনিবার দুপুর নাগাদ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।
হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দীন জানান, বন্দরে এই মুহূর্তে মেশিনারি, ক্লিংকার, সার, জিপসাম, পাথর, সিরামিক ও কয়লা বোঝাই দেশি-বিদেশি মোট ১৪টি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। এসব জাহাজে পণ্য খালাসে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান জানান, ‘ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অবস্থা প্রতিকূল হলে দুবলার চরে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন-