X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধায় ভয়াবহ পানিবৃদ্ধি, দুর্ভোগে ১ লাখ মানুষ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
১৫ জুলাই ২০২০, ২৩:২০আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২০, ২৩:২৩

গাইবান্ধায় ভয়াবহ পানিবৃদ্ধি, দুর্ভোগে ১ লাখ মানুষ ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা ও ঘাঘটসহ গাইবান্ধা জেলার সব নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। দ্বিতীয় দফায় গত চার দিন ধরে পানি বাড়ায় জেলার বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটাসহ চার উপজেলার চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী ২৬টি ইউনিয়নের এক লাখ ২২ হাজারের বেশি মানুষ।

বুধবার (১৫ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে সব রেকর্ড ভেঙে বিপদসীমার ১১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া ঘাঘট নদীর পানি শহর পয়েন্টে বেড়েছে ৯৫ সেন্টিমটার, যমুনা নদীর পানি সাঘাটা পয়েন্ট ও করতোয়া নদীর পানি কাটাখালি পয়েন্টে বেড়ে বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে। ফলে এমন ভয়াবহ পানিবৃদ্ধির ঘটনায় বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়েছে গাইবান্ধাবাসী।

ইতোমধ্যে বন্যায় ডুবে গেছে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের জমির বীজতলা, পাট, ভুট্টা, বাদাম ও মরিচসহ শতশত হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল। এরআগে প্রথম দফার বন্যায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে নষ্ট হয়। তলিয়ে যায় বিভিন্ন এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তাঘাটসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাদ যায়নি ছোট-বড় পুকুর ও মাছের খামার। কিছু এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় নৌকা ও ভেলায় চলাচল করছে মানুষ। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বানভাসীদের।

এদিকে, ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকে আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, উচু সড়ক ও আশ্রয়কেন্দ্রে। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য, গোখাদ্য ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। যদিও দুর্গত এলাকায় সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল্য বলে অভিযোগ বানভাসী মানুষের। খাদ্য কষ্ট নিয়ে খোলা আকাশের নিচে পলিথিনের তাবু টানিয়ে থাকছে মানুষ। টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে দুর্ভোগ।

গাইবান্ধায় ভয়াবহ পানিবৃদ্ধি, দুর্ভোগে ১ লাখ মানুষ অপরদিকে, প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের ভাঙনে বিলিন হয়েছে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন তীরবর্তী এলাকার বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও অসংখ্য গাছপালা। গত ১৫ দিনে এসব এলাকার অন্তত দুই শতাধিক বসতবাড়ি ও আবাদি জমি বিলিন হয়েছে। ফুলছড়ি ও সদর উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েকটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পানির চাপে যে কোনও সময় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, অবিরাম বর্ষণ ও উজানের ঢলে জেলার প্রতিটি নদ-নদীর পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন জানান, এই পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গাইবান্ধা জেলার চার উপজেলার বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ৪১০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ লাখ টাকা, এক হাজার ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং শিশু খাদ্যের জন্য চার লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গোখাদ্যর জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় চার লাখ টাকা। দুর্গত এলাকায় পর্যায়ক্রমে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বন্যা কবলিত চার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৮০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং ৬০টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা সদরে এবং প্রতিটি উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

/এনএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা