কাঁধের ওপর ফুটবল নাচিয়ে গিনেস রেকর্ড বুকে নাম লেখানো বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আশিকুর রহমান জুবায়েরকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার যৌথ উদ্যোগে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের কক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জুবায়েরকে প্রথমে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন খান আলো জুবায়েরের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকার খাম এবং ক্রেস্ট তুলে দেন। এ সময় প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জুবায়ের জেলা প্রশাসকের কক্ষে ফুটবল নিয়ে কসরত করে দেখান।
জুবায়ের বলেন, ছোটবেলা থেকে ইচ্ছে ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। কিন্তু অভিভাবকদের শাসনের কারণে সে আশা পূরণ হয়নি। এরপর ফুটবল নিয়ে শুরু হয় কসরত। এতে করে ফুটবল আমার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। আমি ইচ্ছেমতো ড্রিবলিং করতে পারতাম। তবে এ প্রাকটিস বেশিরভাগ সময় আমাকে ঘরের মধ্যেই করতে হয়েছে। কারণ, আমাদের দেশে খেলোয়াড় হওয়ার তেমন সুযোগ না থাকায় আমার পিতামাতার এ ব্যাপারে উৎসাহ ছিল না। এ কারণে বাবা-মা যাতে বুঝতে না পারে আমি প্রাকটিস করছি এ জন্য কাঁধের ওপর ফুটবল নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করি।
জুবায়ের বলেন, ওই চেষ্টা থেকে শুরু হয় কাঁধের ওপর ফুটবল নাচানো। আমার টার্গেট ছিল দীর্ঘক্ষণ ধরে কাঁধের ওপর ফুটবল নিয়ন্ত্রনে রাখার। ওই টার্গেট অনুযায়ী আমি আমার কক্ষের দরজা আটকে প্রাকটিস চালিয়ে যেতে থাকি। এতে আমার সাফল্য আসে। আমার মনে হচ্ছিল ফুটবল আমার কথা শোনে। আমি যতক্ষণ ইচ্ছে কাঁধের ওপর ফুটবল নাচাতে সক্ষম হই। এরপর কাঁধের ওপর দীর্ঘক্ষণ ফুটবল নাচানোর ভিডিও গিনেস রেকর্ড কমিটির কাছে পাঠাই। গিনেস রেকর্ড কমিটির পক্ষ থেকে এক্সপার্ট পাঠিয়ে আমার পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেখানে বিশ্বের মধ্যে আমি এক মিনিটের মধ্যে সবচেয়ে বেশিক্ষণ কাঁধে ফুটবল নাচানোর রেকর্ড গড়ি।
জুবায়েরের বাবা জালাল আহম্মদ বলেন, আমাদের দেশে খেলোয়াড়দের সাফল্য তেমন একটা বেশি নয়। এ জন্য খেলাধুলার প্রতি আমাদের তেমন একটা আগ্রহ নেই। তাই ছেলেকে সবসময় লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী হতে শাসন করা হতো। এরপরও সে আমাদের অগোচরে প্রাকটিস করে যে সাফল্য দেশের জন্য বয়ে এনেছে তাতে আমরা দারুণ খুশি। তার সাফল্যে বিশ্বব্যাপী দেশের নাম ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু তারপরও আমরা চাইবো জুবায়েরের লেখাপড়ায় এভাবে বড় একটা সাফল্য আসুক।