সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ ও বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তের উদ্দেশ্যে একক পদযাত্রায় বের হওয়া হানিফ বাংলাদেশি তার যাত্রা শুরুর ২০তম দিনে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা শহরে পৌঁছেছেন। বুধবার (৩০সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাগেশ্বরী উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছান তিনি। সেখানে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানীর বাবা-মা'র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত পর্যন্ত পদযাত্রার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণবশত: পদযাত্রা সামান্য সংক্ষিপ্ত করেছেন হানিফ। নাগেশ্বরীর রামখানা ইউনিয়নে ফেলানীর বাড়িতে গিয়ে তার বাবা মার সঙ্গে সাক্ষাত করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে সে সূচি সামান্য পরিবর্তন করে নাগেশ্বরী উপজেলা শহরে পদযাত্রা শেষ করে সেখানেই কিশোরী ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও মা জাহানারা বেগমের সঙ্গে সাক্ষাত করেন হানিফ।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার ) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামন থেকে একক পদযাত্রা শুরু করেন হানিফ বাংলাদেশি।
হানিফ বাংলাদেশির বাড়ি নোয়াখালী জেলা সদরের জাহানাবাদ গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মান্নান। পেশায় ট্রেডিং ব্যবসায়ী এই যুবক বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার প্রতিবাদ, প্রতিটি হত্যার বিচার ও হত্যা বন্ধের দাবিতে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা পর্যন্ত একক পদযাত্রা করেন।
হানিফ জানান, গত সোমবার কুড়িগ্রাম জেলা শহরে পৌঁছে শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেখানে দুই রাত বিশ্রাম নিয়ে বুধবার সকালে আবারও নাগেশ্বরীর উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন তিনি। পদযাত্রা শেষে বুধবার বিকালে তিনি বাস যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুড়িগ্রাম ত্যাগ করেন।
পদযাত্রা সম্পর্কে হানিফ বলেন, বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র। আমরা চাই ভারত প্রতিবেশীর সঙ্গে মানবিক আচরণ করুক। কিন্তু প্রতিনিয়ত ভারতের বিএসএফ বিভিন্ন ঠুনকো অজুহাতে নিরীহ বাংলাদেশিদের হত্যা করে চলছে। যখন যে দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তারা কোনও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এই সরকারের ১২ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে, এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে প্রায় ৫০০ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। তিনি সীমান্তে সংঘটিত প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। সীমান্ত হত্যা বন্ধ হলেই তার এই পদযাত্রার উদ্দেশ্য সফল হবে বলে জানান তিনি।